মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা: ভিসার দাম, বেতন কত ও আবেদনের নিয়ম ২০২৩

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসায় কাজের অনেক চাহিদা ও সুযোগ রয়েছে। জানুন মালয়েশিয়া ফ্যাক্টটির ভিসার দাম কত, বেতন কত টাকা ও আবেদন করার নিয়ম বিস্তারিত।

Advertisement

বর্তমানে মালেশিয়ার বিভিন্ন ধরনের ভিসার মধ্যে মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা অনেক বেশি চাহিদা ও সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন। বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার শ্রমিক মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসায় কাজ করতে যায়।

আজকের আলোচনা থেকে আমরা জানবো কিভাবে মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসা আবেদন করা যায়, কি কি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে, মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসার দাম, বেতন এসকল বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু তথ্য। 

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসার আবেদন করতে বৈধ Passport, NID কার্ডের কপি, মেডিকেল রিপোর্ট, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, মেডিকেল ফিটনেস ইত্যাদি ডকুমেন্ট জমা দিতে হয়। কাজের উদ্দেশ্যে Factory Visa মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে বেশ কিছু কাগজপত্র দিতে হয়।

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসায় যেতে যা যা লাগে:

  • কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদী আবেদনকারীর ভ্যালিড পাসপোর্ট;
  • NID Card বা জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি;
  • আবেদনকারীর ৪ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি;
  • আবেদনকারীর পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি;
  • চেয়ারম্যান কর্তৃক সত্যায়িত সার্টিফিকেট;
  • আবেদনকারীর Medical Test Report;
  • Educational Certificate এর কপি

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা আবেদনের সময় আপনাকে উপরোক্ত সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে এবং অবশ্যই সকল কাগজপত্র সঠিক এবং নির্ভুল হতে হবে।

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা আবেদন করার নিয়ম 

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা আবেদনের জন্য আপনাকে অবশ্যই বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি লাইসেন্স প্রাপ্ত  রিক্রুটিং এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করতে হবে এবং সেই সাথে আপনার সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে ৩ দিনের ট্রেনিংয়ে অংশগ্রহণ করতে হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন: সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার উপায় ও যা লাগবে

চলুন জেনে নেয়া যাক কিভাবে মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসার আবেদন করা যাবে তার নিয়ম।

ধাপ ১: বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন করুন

সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য আপনাকে BMET Registration করতে হবে। নিজের মোবাইল থেকেই বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন করে নিতে পারবেন।

এজন্য, আপনার মোবাইলে Google Play Store থেকে Ami Probashi App ডাউনলোড করে প্রথমে আমি প্রবাসী রেজিস্ট্রেশন করুন। তারপর লগইন করে বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।

Advertisement

নিচের অন্য সকল ধাপ সম্পন্ন করে ভিসা হাতে পাওয়ার পর আবার বিএমইটি ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন করে BMET Smart Card Download করে নিতে হবে।

ধাপ ২: এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করুন

সরকারিভাবে না হলে সরাসরি কোন Visa Agency এর মাধ্যমেও মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। বাংলাদেশে অনেকগুলো সরকারি ও বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি রয়েছে যারা মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা আবেদনের কাজ করে থাকে।

এক্ষেত্রে ভিসার আবেদনের ক্ষেত্রে অবশ্যই মালয়েশিয়ার অনুমোদিত ভিসা এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করে আবেদন করতে হবে।

ধাপ ২ – প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিন

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসার আবেদন ফরমসহ আপনার সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বা ডকুমেন্টস ভিসা এজেন্সিতে জমা দিতে হবে। ভিসা এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করে আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে এবং তা নির্ভুলভাবে পূরণ করে সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের সাথে জমা দিতে হবে।

Advertisement

ধাপ ৩ – Special Training এ অংশগ্রহণ করুন 

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে তিন দিনের Special Training নিতে হবে। এই স্পেশাল ট্রেনিং এ মেডিকেল রিপোর্টের পাশাপাশি বিভিন্ন শারীরিক টেস্ট করানো হবে এবং এর বিস্তারিত ওভারভিউ কোম্পানি থেকে আপনাকে দিয়ে দেয়া হবে।

উপরোক্ত ধাপগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করে আপনি খুব সহজেই Malaysia Factory Visa পাওয়ার আবেদন করতে পারবেন।

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসার দাম কত

সাধারণত মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসার দাম ২,৫০,০০০ টাকা থেকে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা পাওয়া খুব একটা কঠিন কাজ নয়। তবে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি এজেন্সি ভেদে মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসার প্রসেসিং ও দাম কমবেশি হয়ে থাকে।

অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে যে মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে। আসলে এটি বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে।

অনেক Visa Agency ভিসা বানানোর ক্ষেত্রে মেডিকেল টেস্ট সহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক খরচ নিজেরাই বহন করে বা সকল ধরনের খরচের টাকা একসাথে নিয়ে নেয়। আবার অনেক Agency আছে যারা কোন ধরনের খরচ বহন করে না বরং প্রয়োজন অনুসারে পরবর্তীতে টাকার পরিমাণ বৃদ্ধি করে থাকে।

এক্ষেত্রে আগে থেকেই খোঁজখবর নিয়ে একটি ভালো এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করতে হবে এবং ন্যায্য মূল্যে ভিসা নিতে হবে। 

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসায় বেতন কত

বর্তমানে মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসায় একজন নতুন শ্রমিকের বেতন প্রায় ২৪ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩৫ হাজার টাকা এবং পুরাতন অভিজ্ঞ শ্রমিকদের বেতন প্রায় ৪০ হাজার টাকা থেকে ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দেয়া হয়। মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসার বেতন একজন শ্রমিকের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার উপর অনেকাংশে নির্ভর করে।

আরও পড়ুন: মালয়েশিয়া কাজের বেতন কত

কোন শ্রমিক যদি প্রশিক্ষণ নিয়ে বিশেষ দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা সহকারে ফ্যাক্টরি ভিসায় নিয়োজিত হয় তবে তার বেতন অন্যান্য নতুন শ্রমিকদের তুলনায় কিছুটা বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

বাংলাদেশ থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়ে এবং দক্ষতা অর্জন করে যদি একজন শ্রমিক মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসায় কাজ করতে পারে তাহলে তার বেতন ও সুযোগ সুবিধা অনেকাংশেই বৃদ্ধি পাবে।

কেন মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসায় যাবেন

বর্তমানে মালয়েশিয়ায় দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকদের অন্যান্য কাজের তুলনায় ফ্যাক্টরির কাজে ভালো বেতন ও সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়। বাংলাদেশ থেকে একজন শ্রমিক কোন দালালের সহযোগিতা ছাড়াই সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ নিয়ে মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসায় যেতে পারবে।

ফ্যাক্টরি ভিসায় কাজ করার ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলো থাকা খাওয়ার সুব্যবস্থা দিয়ে থাকে এবং শ্রমিকদের যাতায়াত সহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ বহন করে থাকে।

এছাড়া একজন শ্রমিক ফ্যাক্টরির কাজের পাশাপাশি অন্যান্য বিভিন্ন কাজ সেখানে করতে পারবে এবং বাড়তি অর্থ উপার্জন করতে সক্ষম হবে।

তবে অবশ্যই ফ্যাক্টরিতে যে পরিমাণ শ্রম এবং সময় দেওয়ার প্রয়োজন হবে তা সঠিকভাবে পূরণ করে কোম্পানির মালিকের অনুমতি নিয়ে বাড়তি কোন কাজ করতে পারবে।

মূলত মালয়েশিয়ায় অন্যান্য কাজের তুলনায় ফ্যাক্টরি ভিসার কাজের চাহিদা বর্তমানে বেশি হওয়ায় এবং ভালো বেতন ও সুযোগ-সুবিধা থাকায় কাজের উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরির ভিসায় যাওয়াই শ্রেয়।

মালেশিয়ায় কিভাবে ফ্যাক্টরি ভিসায় যাবেন

বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করে মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসায় আবেদন করার মাধ্যমে একজন শ্রমিক খুব সহজেই মালয়েশিয়ায় ফ্যাক্টরি ভিসায় যেতে পারবে।

বিভিন্ন সরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি অথবা বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ দুটি প্রতিষ্ঠান বিএমআইটি এবং বুয়েসেলের মাধ্যমে অথবা বিভিন্ন বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমেও ভিসার আবেদন করে মালয়েশিয়ায় ফ্যাক্টরি ভিসায় যাওয়া যেতে পারে।

সরকারিভাবে ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে ফ্যাক্টরি ভিসার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বা সার্কুলার বের হওয়ার আগ পর্যন্ত আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে।

সরকারিভাবে মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা আবেদন করলে অনেক ক্ষেত্রেই বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক খরচপাতি সরকার কর্তৃক বহন করা হয়ে থাকে এবং এধরনের বিষয়বস্তু খুব কম বেসরকারি এজেন্সিতে দেখা যায়।

তবে আপনি সরকারি ও বেসরকারি উভয় রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমেই সরাসরি মালয়েশিয়ায় ফ্যাক্টরি ভিসায় যেতে পারবেন।

মালয়েশিয়া ভিসা সংক্রান্ত আরও তথ্য

FAQ’s

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসার দাম কত? 

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসার দাম প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। 

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসায় বেতন কত?

শ্রমিকদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে নতুন শ্রমিকদের বেতন প্রায় ২৪ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা এবং পুরাতন শ্রমিকদের বেতন ৪০ হাজার টাকা থেকে ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

সরকার নিবন্ধিত মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা আবেদনের প্রতিষ্ঠান দুটি কি কি?

বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দুটি অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান হলো BMID এবং BOESL যেগুলো বিদেশে কর্মসংস্থান ও ভিসা সংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা দিয়ে থাকে।

Advertisement

Similar Posts

One Comment

  1. সরকারি নির্ধারন ছেয়ে অনেক বেশি টাকা নিয়ে যাচ্ছে কিছু অসাধু এজেন্সি আবার অনেকের কাছ থেকে 6 7 লক্ষ টাকা নিয়ে যাচ্ছে কিন্তু ভিসা দিচ্ছে না। হাজার হাজার ভুয়া এজেন্সি আছে সরকার তাদের কোন ব্যাবস্থা নিচ্ছে না কেন?ফেইসবুকে ডুকলে কানাডা সহ ইউরোপের ভিসার এড দেয় আপনারা কি তাদের লাইসেন্ছে ছেক করাতে পারেন?পারবেন না কারণ একমাত্র বাংলাদেশেই সম্ভব টাকা দিয়ে সব দুর্নীতির করতে। যদি পারেন দেশের বেকার যুবকদের জন্য অল্প টাকার মধ্যে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ করে দেন দেখবে দেখবেন দেশের আরো অনেক উন্নত হবে ইন্ডিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখেন ওদের দেশ কেন এত উন্নত।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।