ইতালি ভিসা খরচ 2024 ও আবেদন করার নিয়ম

ভ্রমণ, ব্যবসা অথবা কাজের ভিসায় ইতালি যেতে চান? জেনে নিন বিভিন্ন ধরণের ইতালি ভিসা আবেদন করার নিয়ম, ভিসা আবেদনের লিংক ও ভিসা খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত।

Advertisement

বিশ্বের অন্যতম উন্নত দেশ ইতালি। উন্নত জীবনযাপন ও আর্থিক বিষয়াবলী বিবেচনায় দেশের বহু মানুষ ইতালি যেতে আগ্রহী। ২০২৩ সাল থেকে ইতালিতে নতুনভাবে কর্মী নিয়োগ শুরু হয়েছে। ইতালি ভিসা আবেদন করার নিয়ম সঠিকভাবে অনুসরণ করলে আপনিও পেতে পারেন Italy Visa। 

ইতালি কাজের ভিসার জন্য সরাসরি আবেদন করা যায়না, নিয়োগকর্তাই ওয়ার্ক ভিসা দিতে পারে। এই ব্লগে আপনাদের সুবিধার্থে ইতালির বিভিন্ন ধরণের ভিসার খরচ এবং আবেদন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হলো।

ইতালি ভিসা ২০২৩

করোনা মহামারীর ক্ষতিগ্রস্ততা কাটাতে ২০২৩-২০২৫ সালে, ৩ বছরে মোট সাড়ে চার লক্ষ শ্রমিক নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইতালিয়ান মন্ত্রী পরিষদ।

সিদ্ধান্তের প্রকাশনা অনুযায়ী, ইউরোপের নাগরিক নয় এমন ৪ লক্ষ ৫২ শ্রমিক ধাপে ধাপে ইতালিতে নেওয়া হবে। ২০২৩ সালে ইতালিতে প্রবেশের অনুমতি পাবে ১ লক্ষ ৩৬ হাজার কর্মী। ২০২৪ সালে ইতালিতে প্রবেশের অনুমতি পাবে ১ লক্ষ ৫১ হাজার কর্মী। সর্বশেষ ২০২৫ সালে ১ লক্ষ ৬৫ হাজার কর্মী নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

২০২৩ সালের নির্ধারিত ১ লক্ষ ৩৬ হাজার কর্মীর নিয়োগের আবেদনের প্রাথমিক ধাপ শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে প্রায় ৮২ হাজার শ্রমিক Italy Visa পেয়েছেন। এবং পর্যায়ক্রমিকভাবে বাকিদের ইতালি ভিসা প্রসেসিং হবে। একইসাথে ২০২২ সালের কোটায় আবেদন কারীদের প্রায় ৪০ হাজার শ্রম ইতালিতে প্রবেশের সুযোগ পাবে এই বছর।

আরও পড়ুন:

Advertisement

গত ২৭ মার্চ ২০২৩ তারিখ থেকে ইতালি ভিসা আবেদন করার নিয়মিত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যা ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে শেষ হবে।

Work Visa পাওয়ার জন্য সরাসরি কেউ ইতালি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবে না। নির্ধারিত কাজে নিয়োগকারীর কাছে আবেদন করতে পারবে দক্ষ কর্মীরা।

এই কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত সমগ্র পৃথিবীর জন্য। প্রতিযোগিতামূলক এই যুগে দক্ষ কর্মীদেরই বাছাই করা হবে। বাংলাদেশ থেকে আগামী ৩ বছরে (২০২৩-২০২৫) লক্ষ লক্ষ আবেদনকারীর মধ্যে অনেকেই ইতালি ভিসা পাবে। তবে সেজন্য সঠিকভাবে আবেদন এবং ভিসা প্রসেসিং পদ্ধতি অনুসরণ গুরুত্বপূর্ণ।

ইতালি ভিসা খরচ

ইতালি ভিসার খরচ ভিসার ধরন অনুযায়ী ভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন Business, Travel ভিসার আবেদন খরচ ১২০৭০ টাকা, Family ভিসা খরচ ১৫৬৭০ টাকা, এবং Worker ভিসার ক্ষেত্রে ভিসা খরচ ৯০৭০ টাকা হয়ে থাকে।

Advertisement

ইতালির ভিসা ২ ক্যাটাগরির হয়ে থাকে। C Category বা ‍Short Term Visa যেগুলোর মেয়াদ ৯০ দিন হয় এবং D Category বা Long Term ভিসার মেয়াদ ৯০ দিনের বেশি হয়ে থাকে। ভিসার ধরণ অনুযায়ী এগুলোর Category ও Fee ভিন্ন হয়।

ইতালি ভিসা খরচ

বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা আবেদন ফি কত তা চেক করুন এই লিংক থেকে- ইতালি ভিসা আবেদন ফি কত

ইতালি যেতে কত টাকা লাগে? এ প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, Short Term ভিসার যাবতীয় খরচসহ ইতালি যেতে মোট ৩.৫ – ৪ লক্ষ টাকা এবং Long Term ভিসার ক্ষেত্রে ৮-১০ লক্ষ টাকা লাগে।

তবে সাধারণত ইতালি যেতে বাংলাদেশিরা বিভিন্ন এজেন্টের শরণাপন্ন হয়। এজেন্টরা বিভিন্ন যুক্তিতর্ক দিয়ে ইতালি ভিসার দাম ১৪-১৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে। কিছু কিছু এজেন্ট Non-Seasonal ভিসার কথা বলে Seasonal দেয় এবং এসব ভিসার মেয়াদ ৯-১২ মাসের হয়ে থাকে।

Advertisement

তাই ইতালি ভিসা আবেদন করার নিয়ম ও ভিসা সংগ্রহের ক্ষেত্রে সর্তক থাকুন।

ইতালি ভিসার ধরন

বর্তমানে ইতালি ভিসা আবেদন করার নিয়ম অনুযায়ী নিম্নোক্ত ভিসাগুলো চালু রয়েছে-

  • ইতালি স্পন্সর ভিসা;
  • ইতালি কৃষি ভিসা;
  • স্টুডেন্ট ভিসা;
  • মেডিকেল ভিসা;
  • টুরিস্ট ভিসা;
  • বিজনেস ভিসা;
  • ফ্যামিলি রি-ইউনিয়ন ভিসা।

এসকল ভিসায় ২০২৩ সালে Italy যেতে পারবেন। তবে বাংলাদেশের অধিকাংশ ইতালি গমনকারী ইতালি স্পন্সর ভিসা, কৃষি ভিসা ও বিজনেস ভিসায় গিয়ে থাকে। এই সকল খাতে নিম্নোক্ত মেয়াদ সম্পন্ন ভিসা সিজনাল ও নন সিজনাল ভিসা সংগ্রহ করতে পারবেন-

বেতনভোগী কর্মসংস্থান ভিসা- ইতালিয়ান নিয়োগকর্তা এই ভিসা স্পন্সর করতে পারেন। ভিসার মেয়াদকাল ২ বছর হয়। তবে তা ৫ বছর পর্যন্ত স্থায়ী করা যায়।

স্বকর্মসংস্থান/ বিজনেস ভিসা: Italy গিয়ে ব্যবসা করার জন্য এ ধরনের ভিসা সংগ্রহ করতে হয়। তার জন্য কোন কোম্পানি প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়ীদের সাথে চুক্তি থাকতে হয়। এ ধরনের ভিসা ২ বছর পর্যন্ত বৈধ থাকে।

ইতালি সিজনাল ভিসা/কৃষি ভিসা: কৃষি ও পর্যটন খাতের শ্রমিকদের জন্য এই ভিসা দেওয়া হয়। চুক্তি অনুযায়ী এই ভিসা ৬-৯ মাস মেয়াদী হয়। ইতালি ভিসা আবেদন করার নিয়ম মেনে ভিসা পাওয়া যাবে।

ইতালি ভিসা আবেদন করতে কি কি লাগে 

ইতালি ভিসা পেতে যেসব কাগজপত্র লাগে তা হলো:

  • মেয়াদ সম্পন্ন পাসপোর্টের ২ সেট ফটোকপি;
  • 4*3.5 সে.মি. সাইজে, সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে দুটি সাম্প্রতিক ছবি (Schengen Size or Passport Size)
  • ইতালি ভিসা আবেদন ফরম (আবেদনকারীর স্বাক্ষরিত)
  • জাতীয় পরিচয়পত্র;
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট (প্রযোজ্য হলে);
  • কাজের ভিসা পেতে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের দেয়া ওয়ার্ক পারমিট (প্রযোজ্য হলে);
  • নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের বিস্তারিত তথ্য (প্রযোজ্য হলে)।

এসকল দিয়ে ভিসা প্রসেসিং করার পর ইতালি যেতে আরো প্রয়োজন হবে:

ইতালি ভিসা আবেদন করার নিয়ম অনুযায়ী কাজের ভিসার জন্য নিয়োগকারীর কাছে আবেদন করতে হয়। সেজন্য নিয়োগকর্তা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর একটি সুস্পষ্ট CV যুক্ত কভার লেটার দিয়ে আবেদন করতে হয়। সিভি এর পাশাপাশি যে কাজের জন্য আবেদন করছেন সেই কাজে আপনার যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সম্পর্কিত সনদ যুক্ত করুন।

নিয়োগকর্তা আবেদন গ্রহণ করলে এবং আপনার জন্য ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ করলে, প্রয়োজনীয় তথ্য ও কাজের সনদ দিবেন। তারপর নিকটস্থ ইতালিয়ান কনস্যুলেটে উপরোক্ত সকল কাগজপত্র দেখাতে হবে।

ইতালি ভিসা আবেদন করার নিয়ম

ইতালি ভিসা আবেদন করার জন্য প্রথমে ভিসার শর্ত ও প্রয়োজনীয়তা জেনে সকল কাগজপত্র যোগাড় করুন। এরপর ভিসার ধরণ অনুযায়ী নির্ধারিত Visa Application Form এর মাধ্যমে আবেদন পত্র পূরণ করুন। তারপর আপনার নিকটস্থ Italy Visa Application Center এ ভিসা ফি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

ইতালি ভিসা আবেদন লিংক থেকে অনলাইনে ইতালি ভিসা এপ্লিকেশন ফর্ম পূরণ করেও ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টারে জমা দিতে পারেন। যদি নিজে ফরম পূরণ করতে না পারেন সেক্ষেত্রে PDF ফরম পূরণ করে জমা দিতে পারেন।

ইতালির ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে আপনাকে যে ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে তা নিচে আলোচনা করা হলো:

ধাপ ১: ভিসার ধরণ বাছাই করুন

প্রথমেই আপনাকে ঠিক করে নিতে হবে, আপনি কোন ধরণের ভিসার আবেদন করবেন। কোন ধরণের ভিসার মেয়াদ কতদিন, কি কি কাগজপত্র লাগবে, আপনি আবেদন করার জন্য যোগ্য কিনা, ইতালি ভিসা প্রসেসিং হতে কতদিন লাগবে এসব কিছু জেনে সিদ্ধান্ত নিন।

আপনার প্রয়োজনীয় কোন কাগজপত্র ইংরেজিতে না হলে, তা অবশ্যই আগে English Translate করে নিতে হবে।

ধাপ ২: ভিসা আবেদন ফরম পূরণ করুন

আবেদন করার জন্য প্রথমে ইতালি ভিসা আবেদন ফরম ডাউনলোড করে নিয়ে সঠিকভাবে পূরণ ও প্রিন্ট করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টারে জমা দিন। তাছাড়া আপনি নিজেই অনলাইন ভিসা ফরম পূরণ করেও জমা দিতে পারেন।

ইতালি ভিসা আবেদন লিংক

ইতালি ভিসা আবেদন লিংক হচ্ছে https://e-applicationvisa.esteri.it/

ইতালি ভিসা এপ্লিকেশন ফর্ম ফর বাংলাদেশী

ধাপ ৩: ভিসা আবেদন ফি পরিশোধ করুন

আবেদন ফরম পূরণ করার পর, Visa Application Center এর ক্যাশ কাউন্টারে Debit Card/ Credit Card অথবা নগদ টাকায় Visa Application ফি পরিশোধ করুন। ফি পরিশোধের রশিদ আবেদন ফরমের সাথে জমা দিতে হবে। রশিদের একটি ফটোকপি আপনার কাছে রেখে দিন।

ধাপ ৪: ইতালি ভিসা চেক করুন

আপনার ভিসা আবেদনটি অনুমাদন হয়েছে কিনা, তা অনলাইনে চেক করতে পারেন। তাছাড়া ইতালি ভিসা প্রসেসিং শেষে Italy Embassy থেকে পাসপোর্ট ভিসা ক্রেন্দ্রে পাঠানো হলে আপনাকে ফোন করে বা SMS এর মাধ্যমে জানানো হবে।

আবেদন প্রক্রিয়া কতদূর এগিয়েছে তা আপনি অনলাইনেই চেক করতে পারবেন। আপনার মোবাইল থেকেই Reference Number দিয়ে ইতালি ভিসা চেক করুন।

ইতালি স্পন্সর ভিসা আবেদন

বাংলাদেশ থেকে প্রথমে নিয়োগকর্তার কাছে আবেদন করতে হবে। নির্দিষ্ট কোন কাজে কর্মদক্ষতা থাকলে সে অনুযায়ী নিয়োগকর্তা কর্মী বাছাই করবে। তবে এক্ষেত্রে প্রথমেই ইতালিয়ান কর্মীদের প্রাধান্য দেওয়া হয়। কর্মীর যোগান পর্যাপ্ত না হলে বহিস্ত উৎস থেকে কর্মী নিয়োগ দিতে পারবে।

ইতালি ভিসা আবেদন করার নিয়মে আবেদনের পর আপনি বাছাইকৃত হলে আপনার ইতালীয় নিয়োগকর্তা আপনার ওয়ার্ক পারমিটের জন্য ইতালিয়ান ইমিগ্রেশন অফিসে আবেদন করবে। ইতালিয়ান ওয়ার্ক পারমিট পেয়ে গেলে কাজের ভিসা সংগ্রহ করার জন্য ৬ মাস সময় পাবেন। 

আপনার নিয়োগ করতে আপনাকে সেই ওয়ার্ক পারমিট দিবে। একইসাথে, অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ও যে প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ হবে তার বিস্তারিত তথ্য জানাবে। 

এই সকল তথ্য ব্যবহার করে নিকটস্থ ইতালিয়ান এম্বাসি/ কনস্যুলেটে উপস্থিত হয়ে কাজের ভিসা জন্য বাকি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। ভিসা ফি, বায়োমেট্রিক কার্যক্রম ও অন্যান্য বিষয়বস্তু ইতালিয়ান এম্বাসি পরিচালনা করবে। স্পনসর ভিসায় যেতে ৮-১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়।

ইতালির ভিসার ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ

ইতালিয়ান ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আপনার নিয়োগকর্তা আবেদন করবেন। সেজন্য তাকে নিম্নোক্ত ডকুমেন্টসগুলো দিতে হবে-

  • মেয়াদসম্পন্ন পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি;
  • কর্মসংস্থানের শর্তাবলী, চুক্তি, মেয়াদ, বেতনের তথ্যের সম্মতিপত্র;
  • কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ও কোম্পানির ঠিকানা;
  • ইতালিতে কর্মীর উপযুক্ত বাসস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণ; 
  • ইতালি থেকে কর্মী বহিষ্কারের ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তার ব্যবস্থাপনার তথ্য।

ইতালি কৃষি ভিসা আবেদন 

২০২৩ সালে ইতালিতে কৃষি কাজের জন্য ৮২,৭০৫ জন কর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে। ইতালি ভিসা আবেদন করার নিয়মিত প্রক্রিয়া চলবে ২৭ মার্চ ২০২৩ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত।

ইতালি কৃষি ভিসার জন্য নিয়োগকর্তার কাছে আবেদন করলে তা এবং তা গ্রহণ করা হলে ইতালিয়ান এম্বাসিতে একটি চিঠি পাঠানো হবে। সেই চিঠিতে থাকা আবেদন ফরমের তথ্য পূরনসহ অন্যান্য তথ্য দিয়ে কনস্যুলেটে ভিসা প্রসেসিং করতে হবে।

ইতালি কৃষি ভিসা আবেদন ফি ১১৬ ইউরো বা ১৫-১৭ হাজার টাকার মতো। তবে ভিসা প্রসেসিং ফি নির্ভর করে ভিসার ধরনের উপর। কৃষি ভিসা একটি মৌসুমী কাজের ভিসা। তাই ভিসার খরচ কম। ফ্লাইট টিকেট, বাসস্থান ও অন্যান্য সব খরচ মিলিয়ে ৩.৫ – ৪ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে।

ইতালিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি

ইতালিয়ান মন্ত্রী পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২৩-২০২৫ সালের কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাবে কৃষি ও পর্যটনের খাতে। সিজনাল ও নন-সিজনাল ভিসায় এই খাত গুলোতে কর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে। ইতালি ভিসা আবেদন করার নিয়মে অনুসরণ করে ভিসা নিতে পারবেন।

এছাড়া অন্যান্য শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হবে। যেমন- 

  • ভবন নির্মাণ, জাহাজ নির্মাণ, বিভিন্ন প্রকল্প নির্মাণের শ্রমিক;
  • পণ্য পরিবহনের জন্য ট্রাক ড্রাইভার;
  • হোটেল শ্রমিক;
  • অটোমোবাইল মেকান, ওয়েল্ডার, ইলেকট্রিক্যাল মেকানিক/হেলপার;
  • টেলিকমিউনিকেশন;
  • খাদ্যদ্রব্য উৎপাদনের ফ্যাক্টরি শ্রমিক;
  • বিভিন্ন কোম্পানির শ্রমিক ইত্যাদি।

এসকল কাজের খাত গুলোর পাশাপাশি, ২০২৩-২০২৫ কর্মী নিয়োগ সিদ্ধান্তে বিদেশীদের জন্য নতুন শ্রম খাত যোগ করা হয়েছে। নার্স, ডে কেয়ার কর্মী, যাত্রীবাহী পরিবহন চালক, মৎস্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ কর্মী ইত্যাদি। 

উপরোক্ত কাজগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বাস পরিবহন ও ট্রাক ড্রাইভার হিসেবে ইতালি যেতে পারবেনা। কারণ বাংলাদেশের সঙ্গে ইতালিয়ান ড্রাইভিং লাইসেন্স সম্পর্কিত চুক্তি নেই। তাছাড়া অন্যান্য কাজে যোগ্যতা অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে পারবে।

যারা ইতালি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন

যেকোনো দেশের বৈধ নাগরিক ইতালি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবে। তবে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের বহু দেশের নাগরিক ইতালি যেতে আগ্রহী। তাই প্রাতিষ্ঠানিক কর্মদক্ষতা দিয়ে প্রতিযোগিতাই টিকতে হবে।

ইতালি বিশ্বের অন্যতম উন্নত রাষ্ট্র। প্রাতিষ্ঠানিক ও শ্রমিক নির্ভর কাজ পরিচালনার জন্য ইতালি দক্ষ শ্রমশক্তি নিয়োগ দিয়ে থাকে। নির্দিষ্ট কাজে দক্ষ ব্যক্তিরাই ইতালি ভিসার আবেদনের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবে।

২০২৩-২০২৫ এর কর্মী নিয়োগ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কৃষি, নির্মাণ, হোটেল-রেস্তোরাঁ, মেকানিক, কোম্পানির শ্রমিকদের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তাই এ সকল কাজে দক্ষ ব্যক্তিরা ইতালি ভিসা প্রাপ্তির সম্ভাবনা বেশি।

বাংলাদেশ ইতালি ভিসার আবেদন কেন্দ্র

বাংলাদেশে ইতালি ভিসা আবেদন ও লিগালাইজেশন সেন্টার ঢাকায় অবস্থিত। 

ঠিকানা: প্রগতি সরণি, উত্তর বাড্ডা ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ।
হেল্পলাইন: ০৯৬০৬ ৭৭৭৬৬৬, ০৯৬৬৬ ৯১১৩৮৪;
ইমেল: [email protected]
ওয়েবসাইট: http://www.vfsglobal-it-bd.com

বাংলাদেশে ইতালির এম্বাসী

Road n. 74/79 – Plot n. 2/3 – Gulshan 2 – Dhaka 1212
Phone Number: 88028822781, 88028822782
Website: www.ambdhaka.esteri.it
Email: [email protected]

শেষকথা

বাংলাদেশ থেকে ইতালি ভিসা পাওয়া কিছুটা কঠিন। তবে ইতালি ভিসা আবেদন করার নিয়ম অনুসরণ করলে ভিসা সংগ্রহ করতে পারবেন। ভিসা প্রাপ্তির জন্য কোন এজেন্সি বা এজেন্টের শরণাপন্ন হলে, সতর্ক থাকুন।

FAQ’s

বর্তমানে ২০২৩ সালে ইতালি ভিসা সকল দেশের জন্য চালু রয়েছে। ২০২৩-২০২৫ সাল পর্যন্ত ইউরোপের বহিঃস্থ দেশ থেকে ৪,৫০,০০০ কর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে। তাই এই সময়ে ইতালি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।

বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে Seasonal ভিসায় যাবতীয় খরচসহ ৩.৫ – ৪ লক্ষ টাকা লাগে। এছাড়া Non Seasonal ভিসায় মোট ৮-১০ লক্ষ টাকা খরচ হয়।

ইতালি ভিসা আবেদন ফরম ডাউনলোড করতে পারেন এই লিংক থেকে – Italy Visa Application Form Download

ইতালিতে শ্রমিকদের কাজের বেতন ঘণ্টা প্রতি হিসাব করা হয়। একজন কৃষক শ্রমিককে ইতালিতে ঘণ্টা প্রতি ৩-৫ ইউরো দেওয়া হয়। অভিজ্ঞ কৃষি শ্রমিকদের ঘণ্টাপ্রতি ৮-১০ ইউরো দিয়ে থাকে।

ইতালি যেতে সর্বনিম্ন ১৮ বছর বয়স লাগবে।

ইতালি Business ও Travel ভিসার দাম ১২০৭০ টাকা। এছাড়া, Family ভিসার দাম ১৫৬৭০ টাকা, এবং Worker ভিসার ক্ষেত্রে ভিসার দাম ৯০৭০ টাকা। তবে অন্যান্য আরও খরচ সহ মোট খরচের পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পাবে।

হ্যাঁ, ভারত থেকে ইতালি ভ্রমণ করতে Schengen Visa লাগবে। ভারতের সাথে Schengen Zone এ বিনুম্যল্যে ভ্রমণের কোন চুক্তি নেই। তাই ভারতীয় নাগকিদের ইতালি যেতে ভিসার আবেদন করতে হবে।

Advertisement

Similar Posts

4 Comments

  1. ভুয়া তথ্য দিয়েছেন কিছু।যেমন ইটালি যেতে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, করোনা সার্টিফিকেট,ম্যাডিক্যাল এগুলি কিছুই লাগেনা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।