ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার নিয়ম | How to Cancel NID Card
Duplicate বা ২য় বার ভোটার হওয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ। জেনে নিন ডুপ্লিকেট ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার নিয়ম, কি কি কাগজপত্র লাগবে বিস্তারিত তথ্য।
ADVERTISEMENT
ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার সঠিক নিয়ম আমরা অনেকেই জানি না। ভোটার আইডি কার্ড আমাদের নাগরিকত্বের পরিচয় বহন করে। একাধিকবার ভোটার হলে এবং অবৈধভাবে ভোটার বা কম বয়েসে ভোটার হলেই ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করা যায়।
ভোটার আইডি কার্ড হলো বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন কতৃক ইস্যু করা একটি ডকুমেন্ট যা একজন ভোটারের পরিচয়ের প্রমান হিসেবে কাজ করে। এর মাধ্যমে ভোটাররা নির্বাচনে ভোট দিতে পারে। ২০০১ সাল থেকে বাংলাদেশে ভোটার আইডি কার্ড বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
ADVERTISEMENT
তবে কোনো বিশেষ প্রয়োজনে যদি ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার দরকার হয় তাহলে তা করা যেতে পারে। আজকে আমরা ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
কেন ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করবেন?
অবৈধভাবে একাধিকবার এবং ভুল তথ্য দিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্র নিবন্ধন করে থাকলে আপনাকে ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে হবে। নিম্মোক্ত ক্ষেত্রগুলোতে আপনি এনআইডি বা ভোটার আইডি বাতিল করতে পারেন।
ADVERTISEMENT
১. দ্বৈত ভোটার বা একাধিকবার ভোটার হলে
যদি ভুলক্রমে আপনি ২ বার বা Duplicate ভোটার নিবন্ধন করেন, আপনাকে যে কোন একটি নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের জেলা অফিসে লিখিতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করে ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার আবেদন করতে হবে।
একজন ব্যক্তি শুধুমাত্র ১ বার ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয় পত্র করতে পারবে। যদি কেউ ২ বার ও ডুপ্লিকেট ভোটার হয়, তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি ও জরিমানার বিধান রয়েছে।
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন বর্তমানে Fingerprint Matching করছে। যদি কোন Duplicate Entry সনাক্ত করা হয়, তার বিরুদ্ধে আইনগন ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ADVERTISEMENT
অতএব, আপনারা কেউ যদি এমন ২ বার ভোটার হয়েছেন বলে মনে হয়, বা হয়ে থাকেন, এখনি একটি লিখিত আবেদন করে জাতীয় পরিচয় পত্রের Duplicate Entry বাতিল করে নিন।
২. কম বয়সে ভোটার হলে
আমাদের অনেকে আছে বিদেশ যাওয়ার জন্য বা বিভিন্ন কারণে কম বয়সেই বয়স বেশি দেখিয়ে ভোটার নিবন্ধন করেছেন। কিন্তু পরে দেখাগেল Academic Certificate অন্যান্য কাগজপত্র অনুসারে বয়সের গরমিল রয়েছে। এমতাবস্থায়, NID কার্ডে বয়স সংশোধন করা না গেলে, এনআইডি বাতিল করার প্রয়োজন হতে পারে।
ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে কি কি লাগবে
আপনার বর্তমান ভোটার আইডি কার্ডটি বাতিল করার আবেদনের জন্য আপনার কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য বা ডকুমেন্ট প্রদান করতে হবে। ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার জন্য যেসকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রয়োজন হবে তা হলো –
ADVERTISEMENT
- ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্রের আসল কপি;
- Duplicate ভোটার আইডি কার্ডের কপি;
- জন্ম নিবন্ধন কপি;
- পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স এর কপি;
- সরকার প্রদত্ত কোনো প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট থাকলে তার কপি।
কিভাবে ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করা যায়
ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে প্রথমে আপনাকে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার বরাবর লিখিত ক্ষমা প্রার্থনা করে আইডি কার্ড বাতিলের আবেদন করতে হবে। আবেদনের সাথে আপনার ডুপ্লিকেট ভোটার আইডি কার্ড, আসল জাতীয় পরিচয় পত্র ও জন্ম নিবন্ধনের কপি জমা দিতে হবে।
ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করা খুব একটা সহজ কাজ নয়। একজন নাগরিক একবারই ভোটার হতে পারে। একের অধিকবার ভোটার হওয়া বাংলাদেশের আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।
ভোটার হওয়ার পর যদি কোনো ব্যক্তি মারা যায় তাহলে তার ভোটার আইডি কার্ড বাতিল হয়ে যায়। তবে জীবিত অবস্থায় একান্তই যদি আপনার ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে হয় তাহলে কিছু পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে। ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার নিয়ম ধাপে ধাপে আলোচনা করা হলো।
ধাপ ১: লিখিত আবেদন করুন
প্রথমে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবর, আপনার ভুলবশত ২য় বার ভোটার নিবন্ধন হয়েছে, তাই এটি বাতিল করতে চান বলে একটি আবেদন লিখুন। আবেদনটি কম্পিউটার কম্পোজ হলে ভাল হয়।
আবেদনে ভুলভাবে হওয়া এনআইডি নম্বর জানা থাকলে অবশ্যই তা উল্লেখ করবেন। তার পাশাপাশি সঠিক ও আসল জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর যেটি আপনি চালু রাখতে চান তার নম্বরও উল্লেখ করবেন। আবেদনের সাথে কি কি কাগজপত্র জমা দিচ্ছেন তা আবেদনের নিচে সংযুক্তিতে লিখতে ভুলবেন না।
ধাপ ২: Duplicate ভোটার আইডি কার্ড জমা দিন
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন থেকে আপনার লিখিত অনুরোধ গ্রহন করা হলে, আপনার ডুপ্লিকেট ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্রটি জমা দিন। ডুপ্লিকেট আইডি না থাকলে শুধুমাত্র আসল ভোটার আইডি কার্ডের কপি আপনাকে জমা দিতে হবে।
আপনি বর্তমানে যেই ভোটার আইডি কার্ড ব্যবহার করছেন এবং ভবিষ্যতে ব্যবহার করতে চান, এটিই আপনার আসল ভোটার আইডি কার্ড।
ধাপ ৩: পরিচয়ের বৈধতা প্রমান করুন
আপনার ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার জন্য অবশ্যই আপনাকে আপনার পরিচয়ের বৈধতার প্রমান দিতে হবে। আপনার জন্ম নিবন্ধন, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স বা অন্যান্য সরকার প্রদত্ত কোনো প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস থাকলে তা দিয়ে আপনার পরিচয়ের বৈধতা প্রমান করতে হবে।
ধাপ ৪: আবেদন ফি জমা দিন
জাতীয় পরিচয় পত্র বাতিল করতে যদি কোন সরকারি ফি পরিশোধ করতে হয়, যথা নিয়মে তা পরিশোধ করুন। আবেদনের সাথে ফি পরিশোধের চালান, বা রসিদ যুক্ত করে দিতে হবে।
ব্যাস, আপনার দিক থেকে সকল কাজ সম্পন্ন হয়ে গেল। নির্বাচন কমিশন আপনার ডুপ্লিকেট ভোটার নিবন্ধন তথ্য যাচাই করে সেটি বাতিল করে দিবে।
ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার সময়সীমা
আপনার ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার আবেদন গ্রহণের ১ মাসের মধ্যে আপনার কার্ডটি বাতিল হয়ে যাবে। তবে ক্ষেত্র বিশেষে ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার সময়সীমা ১ মাসের বেশি বা ২ মাসও হতে পারে।
তবে আপনার সকল কাগজপত্র ঠিক থাকলে এবং আপনার আবেদনের কারণ বৈধ হলে ১ মাসের মধ্যেই আপনার ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে পারে।
Duplicate ভোটার নিবন্ধনের জরিমানা
কোন নাগরিক যদি ভুলবশত বা ইচ্ছাকৃত ২য় বার ভোটার নিবন্ধন করেন, এটি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। Duplicate ভোটার নিবন্ধন করলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা ৬ মাসের কারাদণ্ড বা উভয় দন্ড হতে পারে। বর্তমানে Fingerprint এবং Eyeish ম্যাচিংয়ের মাধ্যমে সহজেই Duplicate Voter Registration বের করা যায়।
FAQ’s
ADVERTISEMENT