লিথুনিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি ও বেতন কত ২০২৪

লিথুয়ানিয়ায় কন্সট্রাকশন ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল কাজের চাহিদা অনেক বেশি। লিথুনিয়ায় কাজের গড় বেতনও প্রায় লাখ টাকা।

Advertisement
লিথুনিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি
  • Save

ইউরোপে লিথুনিয়ায় কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য অনেক মানুষের স্বপ্ন রয়েছে। কারণ অন্য দেশের তুলনায় লিথুনিয়ায় কাজ করলে বেশি টাকা বেতন পাওয়া যায়। লিথুনিয়ায় প্রতি বছরেই বিভিন্ন কাজের জন্য শ্রমিক নিয়োগ করা হয়। 

লিথুনিয়ায় কোন কাজের চাহিদা বেশি তার জানতে পারলে আপনি সে কাজে অভিজ্ঞতা অর্জন করে লিথুনিয়ায় ভালো বেতনে কাজ করতে পারবেন। চলুন তাহলে জেনে নিই লিথুনিয়ায় কাজের চাহিদা ও বেতন নিয়ে।

Advertisement

লিথুনিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি

লিথুয়ানিয়ায় সাধারণত কন্সট্রাকশন, ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল, কৃষি ও তথ্য প্রযুক্তির কাজের চাহিদা বেশি। লিথুয়ানিয়া যেসব কাজের চাহিদা বেশি তো সেগুলো হলো-

১. কনস্ট্রাকশন

কনস্ট্রাকশন কাজে লিথুনিয়াতে সবচেয়ে বেশি কাজের চাহিদা রয়েছে। এসব কাজগুলো হলো:

  • রাজমিস্ত্রি;
  • ওয়েল্ডার;
  • ইলেকট্রিশিয়ান;
  • প্লাম্বার;
  • কাঠমিস্ত্রি;
  • স্টিল ফিক্সার;

কি কি যোগ্যতা থাকা উচিত: কনস্ট্রাকশন কাজে নির্মাণ শিল্পে প্রশিক্ষণ বা অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। শারীরিকভাবে শক্তিশালী এবং পরিশ্রমী হতে হবে। তাছাড়া, এসব কাজে ইংরেজিতে কিছুটা জ্ঞান থাকা সুবিধাজনক।

Advertisement

২. ফ্যাক্টরি, হোটেল ও রেস্তোরাঁ

লিথুনিয়ায় ফ্যাক্টরি, হোটেল ও রেস্তোরাঁতে অনেক কাজের চাহিদা রয়েছে। এসব খাতের কাজগুলো হলো:

  • বিভিন্ন ফ্যাক্টরি ওয়ার্কার;
  • সুপারভাইজার;
  • ড্রাইভার;
  • হোটেল বা রেস্তোরাঁ কর্মী;
  • হেলথ কেয়ার এসিস্টেন্ট;
  • ক্লিনার;

কি কি যোগ্যতা থাকা উচিত: এসব কাজে ইংরেজিতে যোগাযোগ করার দক্ষতা খুব বেশি প্রয়োজন। তাছাড়া, কাস্টমারকে সেবা দেয়ার অভিজ্ঞতা, বন্ধুত্বপূর্ণ এবং সহায়ক মানসিকতা ও ধৈর্য্য থাকা উচিত।

৩. কৃষি

  • ফার্ম ম্যানেজার;
  • ট্র্যাক্টর ড্রাইভার;
  • কৃষি শ্রমিক;

কৃষি কাজে লিথুনিয়া যেতে চাইলে, অবশ্যই কৃষি মাঠে ও খামারে কাজ করতে সক্ষম অর্থাৎ শারীরিকভাবে শক্তিশালী এবং পরিশ্রমী হওয়া উচিত। এক্ষেত্রে কিছু ইংরেজির জ্ঞান থাকা সুবিধাজনক।

৪. তথ্যপ্রযুক্তি (IT)

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশ্বের সকল দেশেই কাজের চাহিদা বেড়েই চলেছে। লিথুনিয়াতেও তার ব্যতিক্রম নয়। তথ্য প্রযুক্তিতে যে কোন ফিল্ডে যোগ্যতা থাকলেই এখানে খুব বেশি বেতনে কাজ পাওয়া সম্ভব। লিথুনিয়াতে তথ্য প্রযুক্তি খাতে যেসব কাজের চাহিদা রয়েছে:

Advertisement
  • Software and App Developer
  • Web Developer
  • Data Scientist
  • Network Engineer
  • System Admin

কি কি যোগ্যতা থাকা উচিত: কম্পিউটার সায়েন্স, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, বা তথ্যপ্রযুক্তির অন্য কোন বিষয়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে। এছাড়া, বিভিন্ন Programming Language জানা, Database Management System সম্পর্কে অভিঙ্গতা ও ইংরেজি জানা প্রয়োজন।

আরও পড়ুন:

লিথুয়ানিয়া বেতন কত

২০২৪ সালে লিথুনিয়াতে সরকার ঘোষিত নুন্যতম মাসিক মজুরী ৯২৪ ইউরো এবং ঘন্টাপ্রতি নুন্যতম মজুরী ৫.৬৫ ইউরো। বাংলাদেশি টাকায় বর্তমানে লিথুনিয়ায় মাসিক বেতন প্রায় ১ লক্ষ টাকা থেকে ১,৫০,০০০ টাকা। এছাড়া ঘন্টা প্রতি বেতন প্রায় ৭০০ টাকা।

তবে বেতন কত হবে তা মূলত কাজের ধরণ ও অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে। লিথুনিয়াতে কাজে ওভার টাইমের সুযোগ রয়েছে এবং সপ্তাহে কাজ ৫-৬ দিন।

Advertisement

Government Declared National Minimum Wage

Minimum wage per hourPer month
€5.65€924.00
National Minimum Wage, Lithuania

নতুন কর্মচারী: প্রতি মাসে ৯০০ থেকে ১০০০ ইউরো পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন। বাংলাদেশী টাকায় যা ১ লক্ষ থেকে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকার সমান। অভিজ্ঞতা বাড়ার সাথে সাথে বেতন বাড়ানো হয়।

অভিজ্ঞ ও দক্ষ কর্মী: অভিজ্ঞতা বেশি হলে এবং ওভারটাইম কাজ করলে আপনি সর্বোচ্চ ১০০০ থেকে ১২০০ ইউরো পেতে পারেন। যা বাংলাদেশী টাকায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার থেকে থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।

এখানে উল্লেখ্য, লিথুয়ানিয়া প্রজাতন্ত্রের লেবার কোড অনুচ্ছেদ 144 ধারা অনুসারে, কাজের সময় প্রতি সপ্তাহে ৪০ ঘন্টার বেশি হতে পারে না, তাই মাসিক মজুরি ৪০ কর্মঘন্টার সপ্তাহের ভিত্তিতে গণনা করা হয়।

তাই, কোন ব্যক্তির মাসিক কর্মঘন্টা সপ্তাহে ৪০ ঘন্টা হারের চেয়ে কম হলে, তার বেতন নুন্যতম বেতনের চেয়ে কম হতে পারে।

লিথুনিয়া কাজের ভিসা

সরকারি সার্কুলার অনুযায়ী ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেয়ে গেলে কম খরচের মধ্যেই লিথুনিয়া পৌঁছানো সম্ভব। লিথুনিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ৪টি ক্যাটাগরি রয়েছে।

Visa ApplicationVisa Category
সাধারণ কর্মীদের জন্যWork Permit Visa
সিজনালSeasonal Work Visa
অভিজ্ঞ কর্মীদের জন্যEU Blue Card
ইন্ট্রাCompany Transfer Visa

লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বা কাজের ভিসার ক্ষেত্রে আরও যা জানা উচিত।

  • প্রায় ৫-৬ মাসের প্রসেসিং সময় লাগে।
  • ১ বছর মেয়াদি ভিসা
  • প্রতি বছর নবায়নযোগ‍্য 
  • মোট খরচ সর্বোচ্চ ১২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।  

লিথুনিয়া কাজের ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য জানতে দেখুন- লিথুনিয়া কাজের ভিসা

লিথুনিয়া যেতে কত টাকা লাগে

সাধারণত লিথুনিয়া যেতে একজন ব্যক্তির কমপক্ষে ৯ থেকে ১০ লক্ষ টাকা প্রয়োজন হবে। তবে কিছু কিছু এজেন্সিতে ১২ থেকে ১৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নিতে চায়। অনেকে আবার দালালের মাধ্যমে ভিসা প্রসেসিং করে থাকে। সেক্ষেত্রে প্রতারিত হয়ে টাকা হারানো এবং ভিসা না হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

কিন্তু আপনি যদি নিজে নিজে সম্পূর্ণ ভিসা প্রসেসিং করতে পারেন, তাহলে মোটামুটি ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকার মধ্যে লিথুনিয়া যেতে পারবেন। তবে নিজে নিজে কাগজপত্র রেডি করা, ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া, ভিসা আবেদন করার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। 

তাই কোন ভালো এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা প্রসেসিং করিয়ে নেওয়া ভালো। 

লিথুনিয়া ভিসার সুবিধা – কেন যাবেন লিথুনিয়া 

  • লিথুনিয়ায়, ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিসা সফল হয়। Visa Success Rate ৯৮.৭%।
  • লিথুনিয়া ইউরোপের সেনজেনভুক্ত দেশ হওয়ায় লিথুনিয়া ভিসা নিয়ে ইউরোপের সেনজন ভুক্ত ২৭ টি দেশে অবাধে যাতায়াত করা যায়।
  • তুলনামূলক কাজের মজুরি বেশি।

লিথুনিয়া ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা

লিথুনিয়া ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা ১২৮ টাকা (জুলাই ২০২৪ অনুসারে)

উত্তর-পূর্ব ইউরোপের একটি বাল্টিক রাষ্ট্র লিথুয়ানিয়া। এখানে বাংলাদেশের শ্রমিকদের প্রচুর কাজের ক্ষেত্র রয়েছে। তাছাড়া এখানে বেতন মান ভালো। তাই প্রবাসে কাজ করতে ইচ্ছুক বাংলাদেশীদের জন্য লিথুনিয়া একটি উত্তম দেশ হতে পারে।

আর্টিকেলে উল্লেখিত লিথুনিয়ার কাজের ক্ষেত্রগুলোর যেকোনো একটিতে প্রশিক্ষণ নিয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করে, আপনার সুন্দর কর্মজীবনের জন্য লিথুনিয়ায় পাড়ি জমাতে পারবেন।

তথ্যসূত্র:

Advertisement

Similar Posts

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।