জানুন দুবাই ভিজিট ভিসা খরচ কত ও ভিসা বের হতে কতদিন লাগে

ভ্রমণের জন্য দুবাই যেতে চান? জানুন দুবাই ভিজিট ভিসা খরচ কত, কিভাবে আবেদন করবেন এবং দুবাই ভিজিট ভিসা বের হতে কত দিন লাগে এসব নিয়ে বিস্তারিত।

dubai visit visa
  • Save

ADVERTISEMENT

দুবাই আধুনিকতা ও সৌন্দর্যের অন্যতম প্রতিক। সুযোগ হলে অনেকেই সেই বুর্জ খলিফার সুন্দর দেশটিতে একবার হলেও ভ্রমনে যেতে চায়। কিন্তু তার জন্য প্রয়োজন ভিসার।

তাই দুবাই ভিজিট ভিসা খরচ কত ও যেভাবে আবেদন করবেন, আবেদন করতে কি কি লাগে ও দুবাই ভিজিট ভিসা প্রসেসিং সংক্রান্ত সকল তথ্য নিয়েই আজকের আলোচনা।

ADVERTISEMENT

দুবাই ভিজিট ভিসা বের হতে কতদিন লাগে

ট্রাভেল এজেন্সি বা এয়ারলাইন্স গুলোর মাধ্যমে আবেদন করে ভিসা পেতে ১৫ থেকে ৩০ দিন লাগে। ভিসা ফি পরিশোধ করার ১৫ দিনের মধ্যেই ভিসা প্রসেসিং হয়ে যায়। তবে ভিসা সম্পূর্ণভাবে হাতে পেতে ১৫-৩০ দিন বা কিছুটা বেশি সময় লাগতে পারে। সরকারিভাবে ভিসা প্রসেসিং করতে সময় বেশি লাগে।

সরকারিভাবে ভিসা প্রসেসিং করতে টিকেট খরচ সহ ১ লক্ষ টাকার কম প্রয়োজন হয়। অন্যদিকে, ট্রাভেল এজেন্সি গুলোর মাধ্যমে ভিসা প্রসেসিং করলে ১.৫ – ২ লক্ষ খরচ হয় সম্পূর্ন প্রক্রিয়াতে।

ADVERTISEMENT

ঝামেলামুক্ত ভ্রমনের জন্য ট্রাভেল এজেন্সিই উত্তম। তবে প্রতারনা থেকে বাচতে দুবাই ভিজিট ভিসা খরচ কত ও যেভাবে আবেদন করবেন তা যাচাই করে সচেতন হতে হবে।

দুবাই ভিজিট ভিসা খরচ

দুবাই ভিজিট ভিসার খরচ নির্ভর করে ভিসার ধরন ও মেয়াদের উপর। তাছাড়া এয়ারলাইন্স বা ট্রাভেল এজেন্সি ভেদেও ভিসার খরচ কমবেশি হয়ে থাকে। দুবাই ভিজিট ভিসা খরচ মাত্র ১৫-২০ হাজার টাকা হলেও ভিজিট ভিসা পেতে মোট ১ লক্ষ টাকার মতো খরচ হতে পারে।

দুবাই ভিজিট ভিসার মেয়াদ হয় ৩০ দিন থেকে সর্বোচ্চ ৯০ দিন। দুই ধরনের এন্ট্রি প্রোগ্রামে দুবাই ভিজিট ভিসায় যাওয়া যায়-

ADVERTISEMENT

  • সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসা– এ ধরনের ভিসায় শুধু একবারের জন্য ভিজিট করা যায়। একজন ব্যক্তি ৩০ দিন মেয়াদে দুবাই ভ্রমন ভিসায় যেতে ৩৫০ দিরহাম বা প্রায় ১০,০০০ টাকা ভিসা খরচ হয়। তবে ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করলে ১,০০০ দিরহাম পর্যন্ত ফি দিতে হয়।
  • মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা– এ ধরনের ভিসায় ৫ বছর পর্যন্ত কয়েকবার দুবাই ভ্রমন করা যায়। তবে একবারে সর্বোচ্চ ৯০ দিন অবস্থান করা যায়। ৩০ দিন মেয়াদে মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসায় যেতে ৬৫০ দিরহাম ভিসা খরচ হয়। এবং ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করলে ১,৭০০ – ২,৫০০ দিরহাম ভিসার খরচ হয়।

কেউ যদি ভিজিট ভিসায় গিয়ে কাজে যুক্ত হতে চায়, তাহলে কিছু এজেন্সি বা দালাল প্রায় ২-৩ লক্ষ টাকা খরচ নিয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে প্রতারনা থেকে বাচতে দুবাই ভিজিট ভিসা খরচ কত ও যেভাবে আবেদন করবেন তা জেনে রাখা উচিত। 

দুবাই ভিজিট ভিসায় যেতে কি কি লাগে

দুবাই ভিজিট ভিসা প্রসেসিং করতে নিম্নোক্ত ডকুমেন্টস গুলো প্রয়োজন হতে পারে-

  • নির্ভুলভাবে পূরন করা আবেদন ফরম
  • কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদি বৈধ পাসপোর্টের স্ক্যান কপি
  • জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধনের কপি
  • দুই কপি ল্যাব প্রিন্ট রঙিন ছবি (৬×৬ সেমি. ও সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড)
  • করোনা ভ্যাকসিনের সার্টিফিকেট 
  • পূর্বের কোন পাসপোর্ট থাকলে তার কপি 
  • এয়ারলাইন্স এর কনফার্ম টিকেট কপি।

এছাড়াও দুবাইতে অবস্থানকারী কোন ব্যক্তি তার পরিবারের কাউকে ফ্যামিলি ভিজিট ভিসায় নিতে চাইলে –

ADVERTISEMENT

  • ৩০ দিনের ভিজিটের আবেদনকারীর জন্য ৩,০০০ দিরহাম ও ৯০ দিনের জন্য ৫,০০০ দিরহাম মাসিক সেলারি স্টেটমেন্ট দিতে হবে।
  • ভ্রমনকারীর ৬ মাস মেয়াদসম্পন্ন পাসপোর্টের স্ক্যান কপি।
  • দুবাইতে ৩ মাসের ভাড়াটে চুক্তি।
  • ভ্রমনকারীর ২ কপি ল্যাব প্রিন্ট ছবি।
  • প্রত্যেক ভ্রমনকারীর জন্য ২,৫০০ দিরহাম ক্যাশ ডিপোজিট করতে হবে।

উপরোক্ত কাগজপত্র গুলো এয়ারলাইন্স বা ট্রাভেল এজেন্সি তে প্রদান করতে হবে। 

দুবাই ভিজিট ভিসা প্রসেসিং 

বাংলাদেশে দুবাইয়ের জন্য ই-ভিসা কার্যক্রম চালু নেই। তাই সরাসরি এয়ারলাইন্স বা ট্রাভেল এজেন্সিতে আবেদন করতে হবে। সেখানে দুবাই ভিজিট ভিসা খরচ কত ও যেভাবে আবেদন করবেন তার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া জানিয়ে দেওয়া হয়।

তার জন্য পূর্বেই আপনার ভিসার ধরন কেমন হবে এবং কতদিন মেয়াদের ভিসা পেতে চান তা নির্ধারন করে নিতে হবে। অতপর দুবাই ভিজিট ভিসা খরচ কত ও যেভাবে আবেদন করবেন তা নিচের ধাপে অনুসরণ করুন-

  • নির্ধারিত এয়ারলাইন্স এ গিয়ে তাদের কাছ থেকে আবেদন পত্র সংগ্রহ করতে হবে।
  • তারপর নির্ভুল ভাবে আবেদনপত্রটি পূরন করে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলো সহ সংশ্লিষ্ট অফিসে জমাদান করতে হবে। 
  • তারপর আবেদনের ফি প্রদান করতে হবে। 
  • আপনার সাক্ষাৎকারের পর সরকারিভাবে এয়ারলাইন্স গুলো ভিসা প্রসেসিং করবে।
  • আপনার আবেদনের সকল তথ্য সঠিক হলে ১৫-৩০ দিনের মধ্যেই ভিসা আপনার হাতে পাবেন।
  • তবে বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সির সাহায্যে ভিসা প্রসেসিং করলে বেশি অর্থ প্রদান করলেও নিশ্চিতভাবে ভিসা প্রসেসিং করা যায়।

আরও পড়ুন- দুবাই ভিসা চেক

বাংলাদেশ থেকে চারটি এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে দুবাই ভিজিট ভিসা পাওয়া যায়-

  • Etihad Airways (ইতিহাদ এয়ারওয়েজ)
  • Emirates Airline (এমিরাতস এয়ারলাইন)
  • Fly Dubai (ফ্লাই দুবাই)
  • Air Arabia (এয়ার এরাবিয়া)

এয়ারলাইন্স গুলোতে দুবাই ভিজিট ভিসা খরচ কত ও যেভাবে আবেদন করবেন তা জেনে নিন-

১. Etihad Airways

এখানে ভিসার জন্য আবেদন করলে ৩-৫ কার্যদিবসেই আপনার ট্যুরিস্ট ভিসা পেতে পারেন। ভিসার মেয়াদ ৩০ দিন থাকে এবং মেয়াদ সর্বোচ্চ দুই বার বৃদ্ধি করা যায়। প্রতিবার ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করার জন্য ৯৬০ দিরহাম ফি প্রদান করতে হয়। ফি প্রদান করলে তা ফেরতযোগ্য নয়।

ভিসার ধরনভিসার মেয়াদভিসা ফি
সিঙ্গেল এন্ট্রি৩০ দিন৩৫০ দিরহাম
মাল্টিপল এন্ট্রি ৩০ দিন৬৫০ দিরহাম 
সিঙ্গেল এন্ট্রি (লং টার্ম)৯০ দিন১,০০০ দিরহাম 
মাল্টিপল এন্ট্রি (লং টার্ম)৯০ দিন২,৫০০ দিরহাম 

২. Emirates Airline

এখানে আবেদন করলেও ৩-৫ দিনের মধ্যেই ভিসা প্রসেসিং হয়। প্রতিবার ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করতে ৮৬০ দিরহাম ফি প্রদান করতে হয়। 

ভিসার ধরনভিসার মেয়াদভিসা ফি
সিঙ্গেল এন্ট্রি৩০ দিন৩৩০ দিরহাম 
মাল্টিপল এন্ট্রি ৩০ দিন৮০০ দিরহাম 
সিঙ্গেল এন্ট্রি (লং টার্ম)৯০ দিন৬৫০ দিরহাম 
মাল্টিপল এন্ট্রি (লং টার্ম)৯০ দিন১,৭০০ দিরহাম

৩. Fly Dubai

ফ্লাই দুবাইয়ের মাধ্যমে ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে সংশ্লিষ্ট অফিসে গিয়ে আবেদন করা যায়। অফিস থেকে ফরম পূরন করলে ভিসা প্রসেসিং প্রক্রিয়া বলে দেওয়া হবে।

ভিসার ধরনভিসার মেয়াদভিসা ফি
সিঙ্গেল এন্ট্রি৩০ দিন৩৫০ দিরহাম
মাল্টিপল এন্ট্রি ৩০ দিন৬৯০ দিরহাম
সিঙ্গেল এন্ট্রি (লং টার্ম)৯০ দিন৬০০ দিরহাম
মাল্টিপল এন্ট্রি (লং টার্ম)৯০ দিন১,৭৪০ দিরহাম

৪. Air Arabia

দুবাইতে অবস্থান করে থাকলে সংশ্লিষ্ট অফিসে গিয়ে বা বাংলাদেশ এয়ার আরাবিয়া সেলস অফিসের মাধ্যমে আবেদন করা যায়।

ভিসার ধরনভিসার মেয়াদভিসা ফি
সিঙ্গেল এন্ট্রি৩০ দিন৩৭০ দিরহাম
মাল্টিপল এন্ট্রি ৩০ দিন৭০০ দিরহাম
সিঙ্গেল এন্ট্রি (লং টার্ম)৯০ দিন৬৫০ দিরহাম
মাল্টিপল এন্ট্রি (লং টার্ম)৯০ দিন১,৭৫০ দিরহাম

উপরোক্ত তালিকার ভিসা ফি প্রতিষ্ঠানভিত্তিক হওয়ায় তা পরিবর্তনশীল। তবে স্বাভাবিকভাবে ১৫ – ২০ হাজার টাকা খরচে দুবাই ভিজিট ভিসা পাওয়া যায়। এছাড়াও বাংলাদেশের ট্রাভেল এজেন্সি গুলোর ওয়েবসাইট বা অফুসে যোগাযোগ করেও তাদের অফিশিয়াল ভিসা প্রসেসিং প্রক্রিয়া জানতে পারবেন।

অনলাইন থেকেই দুবাই ভিজিট ভিসা চেক করতে পারবেন। দেখুন – দুবাই ভিজিট ভিসা চেক করার নিয়ম

FAQ’s

দুবাই ফ্যামিলি ভিসা খরচ কত?

দুবাই ফ্যামিলি ভিসায় প্রত্যেকের ১৫-২০ হাজার টাকা ভিসার খরচ হয়। এছাড়াও প্রতি ভ্রমনকারীর জন্য ২,৫০০ দিরহাম ক্যাশ ডিপোজিট করতে হয়।

দুবাই ট্যুরিস্ট ভিসা খরচ ২০২৩ কত?

২০২৩ সালে দুবাই ট্যুরিস্ট ভিসায় ৩০ দিন মেয়াদি সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসা খরচ ৩৫০ দিরহাম এবং ৯০ দিন মেয়াদি ভিসার খরচ ১,০০০ দিরহাম। মাল্টিপল এন্ট্রি ৩০ দিন মেয়াদি ভিসা খরচ ৬৫০-৮০০ দিরহাম এবং ৯০ দিন মেয়াদি ভিসা খরচ ১,৭০০-২,৫০০ দিরহাম। তবে অন্যান্য খরচ সহ ভিসা হাতে পেতে ১-১.৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়।

দুবাই ট্যুরিস্ট ভিসা আবেদন করার নিয়ম কি?

বাংলাদেশে দুবাইয়ের জন্য ই-ভিসা কার্যক্রম চালু নেই। তাই এয়ারলাইনস বা ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে সরাসরি অফিস থেকে ভিসা আবেদন করতে হয়। তাছাড়া ট্রাভেল এজেন্সি বা এয়ারলাইন্স ওয়েবসাইট থেকেও দুবাই ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করা যায়।

শেষকথা

দুবাই ভ্রমনে যেতে দুবাই ভিজিট ভিসা খরচ কত ও যেভাবে আবেদন করবেন তার সঠিক তথ্য জানা জরুরি। প্রতারনা থেকে বাচতে যাচাই-বাছাই করে সংগ্রহ করে নিন আপনার প্রয়োজনীয় ভিসাটি।

আজকের আলোচনায় – দুবাই ভিজিট ভিসা খরচ কত ও যেভাবে আবেদন করবেন তার বিস্তারিত তথ্য জানতে পারলাম। লেখাটি কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে জানান। এরকম তথ্যের সন্ধানে ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট- eservicesbd.com এবং সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল- Eservicesbd Telegram Channel ধন্যবাদ।

ADVERTISEMENT

Similar Posts

One Comment

  1. আমি জানতে ইচ্ছুক, যাঁরা কাজের জন্য দুবাইতে যায় তাঁরা তো কিছু এজেন্সির মাধ্যমে গিয়ে থাকে।এতে করে ওই এজেন্সি গুলো তাঁদের কাছ থেকে ৪০০০০০/৪২০০০০ মতো টাকা নিয়ে থাকে। আমি জানতে চাই দুবাইতে কাজের জন্য যেতে এতগুলো টাকা কি আসলেই লাগে নাকি এর থেকেও কম টাকা দিয়ে ভিসা করে যাওয়া যায়।তথ্য দিয়ে একটু হেল্প করবেন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।