সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী দাখিল যেভাবে করবেন

সব সরকারি কর্মচারীকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে সরকার। দেখুন কিভাবে সরকারি কর্মচারীদের নিজ, স্ত্রী ও সন্তানদের সম্পদ বিবরণী দাখিল করবেন।

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নিয়ম
  • Save

ADVERTISEMENT

গত ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়। এরপর আবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে মধ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সম্পদের বিবরণী দাখিল করার জন্য ১৬ অক্টোবর তারিখে বিভিন্ন দপ্তরের নিকট নির্দেশ পাঠানো হয় (নোটিশের লিংক নিচে দেয়া আছে)।

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ
  • Save
সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ, Source: জনপ্রশাসন মন্ত্রলায়

এমতাবস্থায়, আপনার হাতে সময় আর ১ মাস। নির্ধারিত ফরমে আপনাকে আপনার নিজ এবং স্ত্রী সন্তানদের সম্পদের বিবরণী বিস্তারিত তথ্য সহ পূরণ করতে হবে।

এই ব্লগে, আমি আলোচনা করবো সম্পদ বিবরণী কি, কিভাবে পূরণ করবেন তার বিস্তারিত। আশা করি আপনার কাজে লাগবে।

সম্পদের হিসাব বিবরণী কি

সম্পদের হিসাব বিবরণী হলো এক ধরনের তথ্য বিবরণী যেখানে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সকল ধরনের সম্পদ ও দায়ের বিস্তারিত তথ্য ছক আকারে উপস্থাপন করা হয়।

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিলের জন্য একটি নির্ধারিত ফরম রয়েছে। ফরমটি নিচে PDF ও Word file ফরম্যাটে দেয়া হলো।

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী ফরম (নমুনা)

উপরের ছবিতে ক্লিক করে দেখুন

ADVERTISEMENT

আরও পড়তে পারেন:

যেভাবে সম্পদ বিবরণী ফরম পূরণ করবেন

অংশ ক – সাধারণ তথ্যাবলি

সম্পদ বিবরণীর প্রথম অশে রয়েছে কর্মচারীর ব্যক্তিগত তথ্য যেমন নাম-ঠিকানা, জাতীয় পরিচতি, বেতন, পদবী এবং পরিবারের সদস্যদের তথ্য।

পরিবারের সদস্যের নাম, জন্ম নিবন্ধন বা এনআইডি অথবা টিআইএন নম্বর, জন্ম তারিখ, পেশা ও চাকরীরত হলে তার তথ্য দিতে হবে।

ADVERTISEMENT

অংশ খ – সম্পদ

আপনার নিজ অথবা পরিবারের সদস্যের দেশে ও বিদেশে অর্জিত সকল স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির তথ্য এই ফরমে উল্লেখ করতে হবে।

সম্পদ দুই ধরণের হয়ে থাকে, স্থাবর সম্পদ এবং অস্থাবর সম্পদ। যে সকল সম্পদ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা যায় না, তাকে স্থাবর সম্পদ বলা হয়। যেমন- বাড়ি, জমি, ফ্ল্যাট, বাগান, দোকান ইত্যাদি।

আবার অস্থাবর সম্পদ হচ্ছে যে সকল সম্পদ সহজে স্থানান্তর করা যায়। যেমন – গাড়ি, নগদ টাকা, আসবাবপত্র, স্বর্ণালংকার, ব্যাংক জমা, শেয়ার, বন্ড, বীমা পলিসি ইত্যাদি।

ADVERTISEMENT

সম্পদ বিবরণী ফরমে স্থাবর ও অস্থাবর ২ ধরণের সম্পত্তির জন্য আলাদা ছক রয়েছে।

স্থাবর সম্পদ

জমি-জমা, বির্ল্ডিং, ফ্ল্যাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা খামার ইত্যাদি সম্পদ স্থাবর সম্পত্তির ছকে লিখবেন। স্থাবর সম্পত্তির যেসব বিষয় উল্লেখ করতে হবে:

  • অবস্থান
  • পরিমাণ
  • অর্জনের ধরন
  • যার নামে অর্জিত – নিজ/ স্ত্রী/ সন্তান
  • অর্জনের তারিখ ও মূল্য
  • অর্থের উৎস

অস্থাবর সম্পদ

নগদ টাকা, ব্যাংক জমা, ইলেক্ট্রনিকস ও আসবাবপত্র, স্বর্ণালংকার, সঞ্চয়পত্র, ডিপিএস বা অন্যান্য আর্থিক সম্পদ ও যানবাহন থাকলে তার তথ্য এই ফরমে লিখুন। অস্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে তথ্য দিতে হবে:

  • যার নামে অর্জিত
  • সম্পদের পরিমাণ
  • অর্জনের ধরন
  • মূল্য/স্থিতি
  • অর্থের উৎস

অংশ গ – দায়

আপনার নিজ বা পরিবারের কোন সদস্যের নামে কোন ঋণ ও দায় থাকলে তা এই অংশে উল্লেখ করবেন। এখানে দায় সম্পর্কে যেসব তথ্য দিতে হবে:

  • যার নামে ঋণ বা দায় আছে;
  • ঋণদাতা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম;
  • ঋণের উদ্দেশ্য;
  • ঋণ গ্রহণের তারিখ;
  • ঋণের পরিমাণ;
  • অপরিশোধিত ঋণের স্থিতি ইত্যাদি।

সম্পদের হিসাব বিবরণী কোথায় দাখিল করবেন

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা যেখানে সম্পদ বিবরণী দাখিল করবেন:

  • ক্যাডার ও ১ম শ্রেণির নন ক্যাডার কর্মকর্তা (৯ম গ্রেড এবং তদূর্ধ্ব) তাঁর নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের সচিবের নিকট তাঁর সম্পদ বিবরণী দাখিল করবেন।
  • ২য় শ্রেণির গেজেটেড ও নন-গেজেটেড কর্মকর্তাগণ (১০ম গ্রেড) নিজ নিজ নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের নিকট তাঁর সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে হবে।
  • বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধীনস্ত সরকারি অফিস বা প্রতিষ্ঠানের গ্রেড-১১ হতে গ্রেড-২০ পর্যন্ত কর্মচারীগণ তাঁদের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের নিকট সম্পদ বিবরণী জমা দিবেন।

FAQs

৩০ নভেম্বর ২০২৪ তারিখের মধ্যে সরকারি কর্মচারীদের ৩০ জুন ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত সম্পদের বিবরণী জমা দিতে হবে।

যেহেতু সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী ছকে অনেক তথ্য পূরণ করতে হয়, তাই এসব তথ্য Word file বা Docs ফরম্যাটে কম্পিউটার থেকে পূরণ করে প্রিন্ট আউট নিয়ে জমা দেয়া উচিত।

শেষকথা

সম্পদের হিসাব বিবরণীতে সব তথ্য সঠিকভাবে উল্লেখ করতে হবে। কোনরকম মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে নিজে আইনগত জটিলতা থেকে মুক্ত থাকুন।

প্রতি বছরই ৩০ নভেম্বর তারিখের আগে বিগত অর্থবছর অর্থাৎ ১লা জুলাই থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সম্পদ ও দায়ের বিবরণী আপডেট করে জমা দিতে হবে।

বিশেষ করে নতুন কোন সম্পদ অর্জিত হলে বা পুরাতন সম্পদ বিক্রয় করা হলে তা আপডেট করে বিবরণী জমা দিতে হবে।

তথ্যসূত্র:

নোটিশের লিংক (১৬-১০-২০২৪)সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ
নোটিশের লিংক (২২-০৯-২০২৪)সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী দাখিল

ADVERTISEMENT

Similar Posts

মন্তব্য করুন