প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন ২০২৪

জেনে নিন প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করার নিয়ম আবেদনের শর্ত ও প্রতিবন্ধী ভাতা পাওয়ার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত তথ্য।

প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন
  • Save

ADVERTISEMENT

এখন খুব সহজেই মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে অনলাইনে প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদন করা যায়। আবেদন যাচাই বাছাইয়ের পর সরাসরি মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টে ভাতা দেয়া হয়। তাই ঘরে বসেই এখন প্রতিবন্ধী ভাতা গ্রহণ করা যাবে।

বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে প্রতিবন্ধী ভাতার অর্থ G2P পদ্ধতিতে পরিশােধের জন্য অনলাইনে আবেদন গ্রহণ ও যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রতিবন্ধী ভাতা মোবাইলে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে।

ADVERTISEMENT

অনেকেই ভাতা পাওয়ার যোগ্য হলেও প্রতিবন্ধী ভাতা পাওয়ার নিয়ম না জানার কারণে, আবেদন করতে পারেন না। তাই আপনাদের প্রতিবন্ধী কার্ড করার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করলাম।

Update: প্রতিবন্ধী ভাতার অনলাইন আবেদন চলছে।

প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য আবেদনের যোগ্যতা

  1. সংশ্লিষ্ট এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে
  2. প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ অনুযায়ী সমাজসেবা কার্যালয় হতে নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র গ্রহণ করতে হবে।
  3. প্রতিবন্ধী ব্যক্তি যে জেলার স্থায়ী বাসিন্দা সে জেলা হতে নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র নিতে হবে
  4. মাথাপিছু বার্ষিক আয় ৩৬,০০০ (ছত্রিশ হাজার) টাকার উর্ধে নয় এমন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণ আবেদন করতে পারবেন।
  5. আবেদনকারীকে অবশ্যই দুঃস্থ প্রতিবন্ধী হতে হবে।
  6. ৬ (ছয়) বছরের উর্ধে সকল ধরণের প্রতিবন্ধীকে ভাতা প্রদানের জন্য বিবেচনায় নিতে হবে।
  7. বাছাই কমিটি কর্তৃক নির্বাচিত হতে হবে।

প্রতিবন্ধী ভাতা প্রাপ্তির অযোগ্যতা

  1. সরকারি কর্মচারী হলে কিংবা সরকারি কর্মচারী হিসেবে পেনশনভোগী হলে
  2. অন্য কোনভাবে নিয়মিত সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত হলে
  3. কোন বেসরকারি সংস্থা/সমাজকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান হতে নিয়মিতভাবে আর্থিক অনুদানপ্রাপ্ত হলে।

প্রতিবন্ধী ভাতা পাওয়ার নিয়ম

প্রতিবন্ধী ভাতা পাওয়ার জন্য উপরোক্ত যোগ্যতা ও শর্ত পূরণ করলে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। অনলাইনে সঠিকভাবে আবেদন করার পর, আবেদনের প্রিন্ট কপিতে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বা পৌরসভার কাউন্সিলরের স্বাক্ষর নিয়ে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে জমা দিতে হবে।

আবেদনটি যাচাই বাছাইয়ের পর ভাতাভোগী হিসেবে নির্বাচন করা হলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ভাতার টাকা পাওয়া যাবে।

আরও পড়ুন:

ADVERTISEMENT

প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করতে যা লাগবে

অনলাইন আবেদনের জন্য যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন,

  1. জাতীয় পরিচয় পত্র (১৮ বছরের উর্দ্ধে)/ জন্ম নিবন্ধন (১৮ বছরের নীচে হলে )
  2. প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পরিচয় পত্র (সুবর্ণ নাগরিক কার্ড)
  3. ১টি সক্রিয় মোবাইল নম্বর (নগদ/ বিকাশ সহ)

প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন করার নিয়ম

অনলাইনে প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদন করার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন,

  1. সমাজসেবা অধিদপ্তরের ভাতা আবেদন ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে প্রতিবন্ধী ভাতা আবেদন ফরম পূরণ করুন।
  2. জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধন ও সুবর্ন নাগরিক কার্ড দিয়ে আবেদন করার পর প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদন ফরম ডাউনলোড ও প্রিন্ট করে নিন।
  3. স্থানীয় চেয়ারম্যান, পৌরসভার কাউন্সিলরের স্বাক্ষর নিয়ে সমাজসেবা মাঠকর্মী বা উপজেলা সমাজসেবা অফিসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ জমা দিন।

প্রতিবন্ধী ভাতার অনলাইন আবেদন আপনার মোবাইল বা কম্পিউটার ‍উভয় থেকেই করতে পারবেন। আবেদন করার আগে পুরো নিয়মটি আগে পড়ে নিন। কি কি তথ্য প্রয়োজন হবে তা সংগ্রহ করে নিন তারপর আবার এই পোস্টটি দেখে আবেদন পূরণ করলে ভাল হবে।

ADVERTISEMENT

মাঝেমধ্যে কারিগরি কারণে বা  সিস্টেম আপডেটের জন্য আবেদনের ওয়েবসাইটটি বন্ধ থাকতে পারে। “সিস্টেম উন্নয়নের কাজ চলছে। সাময়িক অসুবিধার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত” এই লেখাটি ওয়েবসাইটে দেখা যায়।

আবার আবেদনের একটি নির্দিষ্ট সময় থাকে। যখন নতুন আবেদন গ্রহণ করা হয় তখনি ওয়েবসাইটে আবেদন করা যাবে।

সমাজসেবা অধিদপ্তর প্রতিবন্ধী ভাতা আবেদন করার বিস্তারিত প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে নিচে দেখানো হল।

ধাপ ১ঃ সমাজসেবার ভাতার আবেদনের ওয়েবসাইটের http://mis.bhata.gov.bd/onlineApplication লিংকে ক্লিক করে Google Chrome থেকে এই সাইটে যান। নিচের ছবির মতো একটি পেজ ওপেন হবে। এখানে আমি বুঝেছি, পরবর্তী ধাপে যান এই লেখার আগে টিক দিকে এ বাটনে ক্লিক করুন।

তারপর কার্যক্রম অপশনে প্রতিবন্ধী ভাতা সিলেক্ট করে ডান পাশের সংরক্ষণ বাটনে ক্লিক করুন।

ধাপ ২ঃ  এখানে প্রথম বক্সে যার নামে আবেদন করবেন তার এনআইডি কার্ডের নম্বর লিখুন ও দ্বিতীয় বক্সে তার জন্ম তারিখ সিলেক্ট করে করুন। এরপর ‘যাচাই করুন‘ বাটনে ক্লিক করুন।

প্রতিবন্ধী ভাতা আবেদন
  • Save

ধাপ ৩ঃ এনআইডি কার্ড থেকে ছবিসহ আবেদনকারীর কিছু তথ্য স্বয়ংক্রীয়ভাবে পূরণ হয়ে যাবে। এখান থেকে যেই তথ্য অটোমেটিক পূরণ হবে না সেগুলো নিজে সঠিকভাবে পূরণ করে নিবেন।

  • Save

ধাপ ৪ঃ এই ধাপে আবেদনকারী সম্পর্কে কিছু অতিরিক্ত তথ্য দিতে হবে। তথ্যগুলো হলো,

  • বৈবাহিক অবস্থা
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা
  • পরিবারের সদস্য সংখ্যা (পুরুষ, মহিলা ও হিজড়া)
  • পেশা
  • বার্ষিক আয়
  • স্বাস্থ্যগত বা কর্মক্ষমতা সংক্রান্ত তথ্য
  • সরকারি বা বেসরকারি আর্থিক সুবিধার তথ্য
  • বাসস্থান তথ্য
  • ভূমির পরিমাণ
  • প্রতিবন্ধীর ধরণ ডিআইএস অনুযায়ী
  • প্রতিবন্ধীর মাত্রা ডিআইএস অনুযায়ী
প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন
  • Save

ধাপ ৫ঃ এই ধাপে যোগাযোগের তথ্য দিতে হবে। আবেদনের ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, মোবাইল নম্বরটি কার সেটি সিলেক্ট করুন, ইমেইল (যদি থাকে) পূরণ করুন।

সব তথ্য পূরণ করা হলে একবার সব তথ্যগুলো চেক করে দেখুন কোন তথ্যে ভুল আছে কিনা। সব ঠিক থাকলে সংরক্ষণ বাটনে ক্লিক করে আবেদনটি জমা দিন।

প্রতিবন্ধী ভাতা অনলাইন আবেদন
  • Save

মনে রাখবেন আবেদন জমা দেয়ার পর আর কোন তথ্য পরিবর্তন করার কোন সুযোগ নেই।

ধাপ ৬ঃ আবেদন সাবমিট করা হলে, প্রিন্ট করার অপশন পাবেন। এখানে প্রিন্ট বাটনে ক্লিক করে প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদনটি PDF ফাইলে ডাউনলোড করে নিন।

নিজের প্রিন্টার না থাকলে এলাকার কোন কম্পিউটার সেবার দোকান থেকে ফরমটি প্রিন্ট করিয়ে নিন।

protibondhi vata application
  • Save
প্রতিবন্ধী ভাতা আবেদন ফরম ডাউনলোড

ধাপ ৭ঃ এরপর প্রিন্ট করা ফরমটির নির্দিষ্ট অংশে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বা পৌরসভার কাউন্সিলরের স্বাক্ষর নিয়ে সমাজসেবা মাঠকর্মী বা উপজেলা সমাজসেবা অফিসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ জমা দিন।

প্রতিবন্ধী ভাতা কত টাকা ২০২৪

পূর্বে প্রতিবন্ধী ভাতা ছিল ৭৫০ টাকা করে। কিন্তু এ বছর তা বাড়িয়ে ৮৫০ টাকা করা হয়েছে। যা প্রতি মাসে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা যেমন, বিকাশ, নগদের মাধ্যমে ভাতা গ্রহণ করা যাবে।

আবেদনের শর্তাবলী

যারা ইতোমধ্যে সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক প্রদত্ত বয়স্ক ভাতা, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, হিজড়া জনগোষ্ঠীর বিশেষ ভাতা, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর বিশেষ ভাতা, বেদে জনগোষ্ঠীর বিশেষ ভাতা, হিজড়া জনগোষ্ঠীর শিক্ষা উপবৃত্তি, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর শিক্ষা উপবৃত্তি, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি, বেদে জনগোষ্ঠীর শিক্ষা উপবৃত্তি, চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন ভাতা পাচ্ছেন তাদের পুনরায় আবেদন করার প্রয়োজন নেই।

এছাড়া একজন ব্যক্তি একাধিকবার আবেদন করতে পারবেনা। অন্যথায় আবেদন বাতিল বলে গণ্য হবে।

শেষকথা

প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদন যখন তখন করা যাবে না। সাধারণত আগস্টের শুরুতেই এই তালিকা প্রণয়নের কাজ করা হয়। তাই খেয়াল রাখুন কখন প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে।

ওই নির্দিষ্ট সময়েই প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য অনলাইনে আবেদন করে, চেয়ারম্যান বা পৌরসভা কাউন্সিলরেরস স্বাক্ষর নিয়ে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন জমা দিন।

প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদন নিয়ে কোন প্রশ্ন? নিচের প্রশ্নের উত্তরগুলো দেখুন। উত্তর না পেলে অবশ্যই কমেন্টে আপনার প্রশ্ন করুন।

প্রতিবন্ধী ভাতা নিয়ে সাধারণ কিছু প্রশ্নের উত্তর

জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন ও সুবর্ন কার্ড তথ্য দিয়ে অনলাইনে প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদন করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ভাতা পাওয়া যাবে।

প্রতিবন্ধী ভাতার পরিমাণ মাসিক ৮৫০ টাকা।

প্রতিবন্ধী ভাতা তিন মাস পর পর দেয়া হয়।

অন্যান্য সরকারি ভাতার আবেদনের তথ্য

ADVERTISEMENT

Similar Posts

11 Comments

  1. আমি আমার ছেলের প্রতিবন্ধী কার্ট অনলাইন করিয়েছি কিন্তু তা ডাউনলোড দিয়ে রাখিনি এখন এটা তো বাতার জন্য লাগবে এখন কি করবো?

  2. নতুন আবেদনকারীর তথ্য,
    এই লেখাটি ছাড়া আর কিছুই আসে না,,
    তাহলে কিভাবে আবেদন করবো,,
    নতুন কোনো উইন্ডো ওপেন হয় না?

  3. আমার ভাইয়ের প্রতিবন্ধী কার্ড করিয়েছি, কার্ড হাতেও পেয়েছি কিন্তু কোন ভাতা এখনও পাইনি, এখন আমার কি করনিও, পাশের গ্রামের মেম্বার বলেছে আমাদের ইউনিয়নের নাম নেয়া শেষ আবার নাকি প্রতিবন্ধীতে নাম আসলে সে খানে নাম দিতে, এখন আমাদের কি করনীয়???

  4. প্রতিবন্ধীভাতা আবেদন করার সময় আবেদন কারীর মোবাইল নাম্বার দিলে মোবাইল নং রেজিষ্ট্রেশন করা নাই মোবাইল নং ম্যাস এই গুলা হচ্ছে কী করলে আবেদন করতে পারবো?

    1. মোবাইল নম্বরের আগে দেখেন, Bkash অথবা Nagad Settlement Account কি লেখা আসে। Bkash/ Nagad একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করা না থাকলে এরকম দেখাবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।