ই পাসপোর্ট কি ও ই পাসপোর্টের সুবিধা
জানুন ই পাসপোর্ট কি, এর বৈশিষ্ঠ্য ও সুবিধাসমূহ কি কি বিস্তারিত।
ADVERTISEMENT
বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে অনেক আগেই। ২০২০ সালের ২২শে জানুয়ারি ই পাসপোর্ট কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হল।
অনেকেই হয়তো জানেন না যে ই পাসপোর্ট এবং পূর্বের Machine Readable পাসপোর্টের মধ্যে পার্থক্য কি। তাই শেয়ার করলাম, ই পাসপোর্ট কি, MRP ও E Passport এর মধ্যে পার্থক্য নিয়ে কিছু তথ্য।
ADVERTISEMENT
ই পাসপোর্ট কি
ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ই-পাসপোর্ট হল একটি ইলেকট্রনিক চিপযুক্ত বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট। চিপটিতে সমস্ত Biometric Information থাকবে, যা পাসপোর্ট ধারকের প্রমাণীকরণের জন্য ব্যবহার করা হবে।
ই পাসপোর্টে একটি ইলেক্টনিক চিপ, অ্যান্টেনা ও একটি মাইক্রোপ্রসেসর ব্যবহার করা হয়। পাসপোর্টের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চিপে সংরক্ষিত থাকে।
ADVERTISEMENT
ই-পাসপোর্টে নেওয়া বায়োমেট্রিক তথ্য হল ছবি, আঙুলের ছাপ এবং আইরিস। ইলেকট্রনিক বর্ডার কন্ট্রোল সিস্টেম (ই-বর্ডার) পাসপোর্ট চিপের বায়োমেট্রিক তথ্যকে বাহ্যিক বৈধতার সাথে তুলনা করে।
ই পাসপোর্টে বিশেষ নিরাপত্তা ফিচার যুক্ত করা হয়েছে। পাসপোর্ট চিপের তথ্য Public Key Infrastructure (PKI) এর মাধ্যমে যাচাই করা হয়। তাই প্রতারণা করা কঠিন।
এমআরপি ও ই পাসপোর্টের পার্থক্য
বর্তমানে এমআরপি বা যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের মতো ই-পাসপোর্টের বইও একই রকমের থাকবে। তবে সাধারণ এমআরপি (মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট এবং ই-পাসপোর্টের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হল:
ADVERTISEMENT
মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (MRP) | ই পাসপোর্ট |
---|---|
সাধারণ মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের বইয়ে প্রথমে যে তথ্য সংবলিত দুইটি পাতা থাকে। | ই-পাসপোর্টে একটি PVC কার্ড ও অ্যান্টেনা থাকবে। সেই কার্ডের ভেতরে চিপ থাকবে, যেখানে পাসপোর্ট বাহকের সব তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। |
মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) তুলনা করা যেতে পারে ব্যাংকের চেক বইয়ের সাথে। | ই পাসপোর্টকে তুলনা করা যেতে পারে এটিএম কার্ডের সাথে। |
চেকবই যেভাবে স্বাক্ষর যাচাইবাছাই করে ব্যাংক কর্মকর্তারা অনুমোদন করে টাকা প্রদান করেন। একই ভাবে ইমিগ্রেশনের এমআরপি যাচাই বাছাই করে পাসপোর্টে সিল দিয়ে ভ্রমণের অনুমতি দেয়া হয়। | এটিএম কার্ড দিয়ে যে কেউ নিজে থেকেই টাকা তুলতে পারেন। তেমনিভাবে, ই পাসপোর্ট দিয়ে ইলেক্ট্রনিক গেইট দিয়ে নিজে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে পারেন। তবে পরবর্তী ধাপে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারাই পাসপোর্টে আগমণ অথবা বর্হিগমন সিল দেবেন। |
ই-পাসপোর্টের সুবিধা
ই পাসপোর্টের বড় সুবিধা হলো যে, খুব দ্রুত ও সহজে ভ্রমণকারীরা যাতায়াত করতে পারবেন। ই-গেইট ব্যবহার করে তারা যাতায়াত করবেন তাই তাদের বাড়তি ঝামেলা বা লাইনে দাড়াতে হবে না।
ই পাসপোর্টের সুবিধাগুলো হচ্ছে,
- ভ্রমণকারীরা ই-গেইট ব্যবহার করে তারা যাতায়াত করার কারণে বিভিন্ন বিমানবন্দরে তাদের ভিসা চেকিংয়ের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হবে না। এর মাধ্যমে তাদের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ হবে।
- যখন একজন ভ্রমণকারী ই-পাসপোর্ট ব্যবহার করে যাতায়াত করবেন, সঙ্গে সঙ্গে সেটি কেন্দ্রীয় তথ্যাগারের (পাবলিক কি ডাইরেক্টরি-পিকেডি) সঙ্গে যোগাযোগ করে তার সম্পর্কে তথ্য জানতে পারবে।
- ই-গেটের নির্দিষ্ট স্থানে পাসপোর্ট রেখে দাঁড়ালে ক্যামেরা ছবি তুলে নেবে। তারপর যাচাই করা হবে পাসপোর্ট ধারীর ফিঙ্গারপ্রিন্ট। সব ঠিক থাকলে তিনি ইমিগ্রেশন পেরিয়ে যেতে পারবেন।
- তবে কোন গরমিল থাকলে লালবাতি জ্বলে উঠবে। তখন সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা হস্তক্ষেপ করবেন।
- কারো বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকলে, সেটিও সঙ্গে সঙ্গে জানা যাবে।
- ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্গানাইজেশন (আইসিএও) এই পিকেডি পরিচালনা করে। ফলে ইন্টারপোলসহ বিমান ও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এসব তথ্য যাচাই করতে পারে।
- এখানে ৩৮টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য থাকায় এ ধরণের পাসপোর্ট জাল করা সহজ নয়।
- ই পাসপোর্টের ডাটাবেজে থাকবে পাসপোর্টধারীর তিন ধরণের ছবি, ১০ আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ। ফলে যেকোনো দেশের কর্তৃপক্ষ সহজেই ভ্রমণকারীর সম্পর্কে সব তথ্য জানতে পারবেন।
ই পাসপোর্টের মেয়াদ, ফি ও পৃষ্ঠাসংখ্যা
বাংলাদেশ সরকার আপাতত ৫ ও ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট বিতরণ করছে। ৫ বছর ও ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্টে ৪৮ পৃষ্ঠা ও ৬৪ পৃষ্টার পাসপোর্ট পাওয়া যাবে। যারা ঘন ঘন ভ্রমণ করেন তাদের জন্য ৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট উপযোগী হবে।
ADVERTISEMENT
উল্লেখ্য যে, পূর্বের সাধারণ মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের মেয়াদ ছিল ৫ বছর। তবে ই পাসপোর্টে জনগণের ভোগান্তি ও সুবিধার কথা চিন্তা করে ১০ বছর মেয়াদী করা হয়।
সাধারণ ডেলিভারীতে ৫ বছর মেয়াদী ৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্টের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৪,০২৫ টাকা (ভ্যাট সহ), যেটি সর্বনিম্ন ফি। তবে জরুরী ডেলিভারী, মেয়াদ ও পৃষ্ঠা সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে এর মূল্য বৃদ্ধি পাবে। ই পাসপোর্টে ফি নিয়ে বিস্তারিত জানতে দেখুন- ই পাসপোর্ট ফি কত ২০২২।
ই পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করতে হবে এ চালানের মাধ্যমে। দেখুন এ চালান কিভাবে করতে হয়।
ই-পাসপোর্টে কি ভিসা নিতে হবে
পূর্বের মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (MRP) এর মতো ই-পাসপোর্টের ক্ষেত্রেও ভিসা নিতে হবে। বিভিন্ন দেশের নিয়ম অনুযায়ী সরাসরি বা অনলাইনে ভিসার শর্ত পূরণ করেই ভিসা নিতে হবে।
ভিসা কর্তৃপক্ষ বা দূতাবাসগুলো এই পিকেডি ব্যবহার করে আবেদনকারীর তথ্য যাচাই করে নিতে পারবে। এরপরে তারা বইয়ের পাতায় ভিসা স্টিকার দিতে পারবে বা বাতিল করে দিতে পারবে।
FAQ
বিশ্বের সর্বপ্রথম মালেশিয়া ১৯৯৮ সালে ই পাসপোর্ট প্রদান চালু করে।
ই পাসপোর্ট করতে প্রধানত জাতীয় পরিচয়পত্র প্রয়োজন হয়। যদি বয়স ২০ বছর বা তার কম হয় জন্ম নিবন্ধন দিয়েও ই পাসপোর্ট করা যায়। তার সাথে জরুরী যোগাযোগের জন্য পরিবারের কোন ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র, তার যোগাযোগের তথ্য ও ফি জমা দেয়ার চালান প্রয়োজন হবে।
ই পাসপোর্ট সংক্রান্ত আরো তথ্য
আবেদন | ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন |
ই পাসপোর্ট চেক | E passport check |
ফি’র পরিমাণ | ই পাসপোর্ট ফি কত |
পাসপোর্ট রিনিউ | ই পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম |
পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে | পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে করণীয় |
পাসপোর্টের সকল তথ্য | ই পাসপোর্ট |
হোমপোইজে যান | Home |
ADVERTISEMENT
সুনদর সিস্টেম