মোবাইল হারিয়ে গেলে জিডি করার নিয়ম ও জিডির নমুনা
আপনার মোবাইল ফোন হারিয়েছে? দুঃখজনক ঘটনা। যাই হোক, মোবাইল হারানোর জিডি ২ উপায়ে করতে পারেন, অনলাইনের মাধ্যমে অথবা নিকটস্থ থানায় উপস্থিত হয়ে লিখিত আবেদনের মাধ্যমে।
ADVERTISEMENT
যারা মোবাইল বা কম্পিউটার ইন্টারনেট ব্যবহারে অভ্যস্ত নন, তাদের জন্য অনলাইনে আবেদন করা একটু ঝামেলাপূর্ণ হতে পারে। এক্ষেত্রে আপনারা, মোবাইল হারানোর জিডি নমুনা অনুসরণ করে একটি আবেদন লিখে জিডি করতে পারেন।
যদি থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরী করা সম্ভব না হয়, আপনি ঘরে বসে অনলাইনে যেকোন কিছু হারানোর জিডি করতে পারেন। দেখুন অনলাইনে জিডি করার নিয়ম।
ADVERTISEMENT
জিডি আবেদন লেখা বা অনলাইন জিডি ফরম পুরণ করার আগে আসুন জেনে নিই, মোবাইল হারিয়ে গেলে জিডি করতে কি কি তথ্য লাগবে।
মোবাইল হারানো জিডি করতে কি কি লাগে
মোবাইল ফোন হারানোর জিডি করতে যেসব ডকুমেন্ট ও তথ্য প্রয়োজন হবে এগুলো হলো:
- মোবাইল ফোন হারানোর সময় ও তারিখ;
- মালিকের জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি;
- মোবাইল ফোনের IMEI Number (দুইটি);
- মোবাইলের ব্র্যান্ড, মডেল এবং RAM ও ROM কত জিবি;
- মোবাইল ফোনের কালার;
- মোবাইলে ব্যবহৃত সিমের নাম্বার তথ্য;
- জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগ একজন ব্যক্তির নাম ও মোবাইল নাম্বার;
- মালিকের জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি;
- কিভাবে মোবাইল ফোনটি হারিয়েছে তার বিস্তারিত তথ্য।
মোবাইল হারানোর জিডি নমুনা
জিডি আবেদনে আপনাকে মোবাইলের বিভিন্ন বিস্তারিত তথ্য, হারানোর স্থান ও সময় উল্লেখ করতে হবে। নিচে একটি মোবাইল হারানোর জিডি নমুনা দেখানো হলো।
জিডির নমুনা কপি
তারিখ:
বরাবর,
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা,
(থানার নাম)
ADVERTISEMENT
বিষয়- হারানো মোবাইল ফিরে পেতে সাধারন ডায়েরী করার জন্য আবেদন।
জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে, আমি (নাম), জাতীয় পরিচয়পত্র নং- (NID কার্ডের নাম্বার), বয়সঃ ( আপনার বয়স), পিতাঃ (পিতার নাম), ওয়ার্ডঃ ( আপনার ওয়ার্ডের ঠিকানা), জেলাঃ (জেলার নাম), থানাঃ (আপনার থানার নাম) এই মর্মে জানাচ্ছি যে, আমার নিম্নবর্ণিত মোবাইল ফোনটি হারিয়ে গেছে।
হারানো মোবাইল ফোনের বর্ণনা:
ADVERTISEMENT
- ব্র্যান্ড ও মডেল: Iphone 12 Pro, 6GB 128GB
- Colour: Silver
- IMEI 1:
- IMEI 2:
- Sim Number:
- মালিকের এনআইডি নাম্বার:
- হারানোর সময়:
- হারানোর স্থান:
হারানো মোবাইলে আমার ব্যক্তিগত ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে এবং একটি নিবন্ধিত সিম রয়েছে। কোন অসাধু ব্যক্তির হাতে মোবাইলটি থাকলে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারি। তাই উক্ত ফোনটি ফিরে পেতে আপনার থানায় সাধারন ডায়েরি করা ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা আবশ্যক।
অতএব, উপরোক্ত বিষয়টি আপনার থানায় সাধারন ডায়েরিভুক্ত করে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে আমার ফোন খুজে বের করে বাধিত করবেন।
বিনীত নিবেদক- (নাম)
পিতা/ স্বামী- (নাম)
বর্তমান ঠিকানা-
মোবাইল নাম্বার- (আপনার সাথে যোগাযোগের মোবাইল নাম্বার)
এভাবে একটি জিডি আবেদন লিখে থানায় উপস্থিত হয়ে দায়িত্বরত অফিসারের কাছে জমা দিতে হবে। জিডির আবেদনটি অবশ্যই ২ কপি করবেন।
আবেদনটি সাধারন ডায়েরী বা জিডিভুক্ত করার পর, আবেদনের এক কপিতে জিডি নাম্বার ও তারিখ উল্লেখ করে পুলিশ অফিসার স্বাক্ষর ও তার সীল দিয়ে আপনাকে দিবেন।
আপনি এই জিডি কপিটি সংরক্ষণ করবেন। ভবিষ্যতে কোনো প্রয়োজনে এটি কাজে লাগতে পারে।
এছাড়া, gd.police.gov.bd ওয়েবসাইট থেকেও অনলাইনে জিডি করা যাবে। তবে এজন্য প্রথমে মোবাইলে বাংলাদেশ পুলিশের জিডি অ্যাপ ইনস্টল করে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
অনলাইনে জিডি করতে চাইলে দেখুন- অনলাইনে থানায় জিডি করার নিয়ম
জিডি করতে কত টাকা লাগে?
জিডি করতে কোনো টাকা লাগে না। এটি একজন নাগরিকের আইনি অধিকার, যা রাষ্ট্র তাকে দিয়েছে। তাই, জিডি করতে থানায় কোনো টাকা দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
তবে, যদি আপনি নিজে জিডি আবেদন না লিখে থানায় একজন কনস্টেবল বা অন্য কোনো পুলিশ সদস্যকে দিয়ে লেখাতে হয়, সে ক্ষেত্রে তাকে হয়তো কিছু টাকা দিতে হতে পারে। যদিও এটির কোন নিয়ম নেই।
তবে জিডির জন্য কোন টাকা দিতে হয় না। যদি কোনো থানায় আপনার কাছে জিডি করতে টাকা দাবি করা হয়, তাহলে আপনি অফিসার ইন চার্জকে জানাতে পারেন। তিনি ব্যবস্থা না নিলে সার্কেল অফিসার অথবা জেলা এসপি অফিসে জানাতে পারেন।
জিডি ডায়েরিভুক্ত করার পর, আপনাকে একটি জিডি নম্বর দেওয়া হবে। এই নম্বরটি সংরক্ষণ করুন। ভবিষ্যতে কোনো প্রয়োজনে এটি কাজে লাগতে পারে।
জিডি প্রত্যাহার করার নিয়ম
জিডি করার পর যদি আপনার হারানো ফোনটি পেয়ে যান, জিডি প্রত্যাহার করতে হবে। জিডি প্রত্যাহার করার জন্য, যে থানায় জিডি করেছেন সে থানার অফিসার ইন চার্জ বরাবর জিডি নাম্বার ও তারিখ উল্লেখ করে সেটি প্রত্যাহার করার জন্য আবেদন করতে হবে।
প্রত্যাহার আবেদনে আপনার নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, জিডির নম্বর, তারিখ এবং প্রত্যাহারের কারণ উল্লেখ করুন।
জিডি প্রত্যাহার করার জন্য আপনাকে কোনো টাকা দিতে হবে না। জিডি প্রত্যাহারের পর, থানায় একটি প্রত্যাহার সনদ দেওয়া হবে। এই সনদটি সংরক্ষণ করুন। ভবিষ্যতে কোনো প্রয়োজনে এটি কাজে লাগতে পারে।
আরও পড়ুন:
ADVERTISEMENT