খাস জমি চেনার উপায় | কিভাবে চিনবেন কোন জমি খাস
সরকারি জমিকেই খাস জমি বলা হয়। ব্যক্তিমালিকানা ছাড়া সকল জমিই খাস জমি। আসুন জানি খাস জমির চেনার উপায়গুলো কি কি।
ADVERTISEMENT
খাস জমি কি? খাস জমি চেনার উপায় কি? কি কাজে ব্যবহার করা হয় এই সম্পর্কে আমরা অনেকেই অজানা। সরকারি মালিকানাধীন জমি যেগুলো সাধারণ জনগণের ব্যবহারের অনুমতি নেই এগুলোই হলো খাস জমি।
বাংলাদেশে খাস জমির পরিমান অনেক। এইসব জমি বিভিন্ন সরকারি কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আজকের আলোচনায় আমরা খাস জমি চেনার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
ADVERTISEMENT
খাস জমি কি?
যেকোনো রাষ্ট্রের সরকারের মালিকানাধীন জমি গুলোই হলো খাস জমি। সরকার কতৃক নিয়ন্ত্রিত এই জমি গুলো কৃষি, উন্নয়ন, সমাজকল্যাণ প্রকল্প ইত্যাদি কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বিনা অনুমতিতে সাধারণ জনগণ এই খাস জমি ব্যবহার করতে পারে না।
যেহেতু খাস জমি গুলো সরকারের হাতে ন্যাস্ত থাকে সেহেতু সরকার প্রদত্ত নিয়মনীতি অনুযায়ী এই জমি কোন কাজে ব্যবহার করা হবে তা নির্ধারিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশের খাস জমি গুলো সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় যে কেউ এগুলো ক্রয় বিক্রয় বা ব্যবহার করতে পারে না।
ADVERTISEMENT
অনেক সময় কোনো ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি যদি ৩ বছরের বেশি সময় ধরে খাজনা প্রদান না করে তবে তা সরকার কতৃক বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং তা খাস জমি হিসেবে বিবেচিত হয়।
আরও পড়ুন:
খাস জমি চেনার উপায়
স্থানীয় ভূমি অফিস থেকে জমির দাগ নম্বর ও খতিয়ান যাচাই করে খাস জমি চেনা যায়। তাছাড়া, কোন জমির ব্যক্তিগত মালিকানা না থাকলেই বোঝা যায় সেটি খাস জমি। বাংলাদেশের খাস জমি বলতে সরকারি মালিকানাধীন জমি গুলোকে বোঝায়।
ADVERTISEMENT
অনেকেই সাধারণ ব্যবহারযোগ্য জমি ও খাস জমি চিনতে ভুল করেন। খাস জমি চেনায় বিভিন্ন উপায় আছে। চলুন জেনে নেয়া যাক খাস জমি চেনার উপায় সমূহ:
১. স্থানীয় ভূমি অফিস থেকে
আপনার স্থানীয় এলাকায় খাস জমি আছে কিনা তা জানার জন্য বা নিশ্চিত করার জন্য আপনার এলাকার স্থানীয় সরকারি কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে পারেন।
আপনার এলাকার স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ বা পৌরসভা অফিসে যোগাযোগ করলেই তারা আপনাকে উক্ত এলাকার খাস জমি সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সাহায্য করবে।
ADVERTISEMENT
২. সরকারি নোটিশ বোর্ড
খাস জমি গুলো যেহেতু সরকারি মালিকানাধীন হয়ে থাকে তাই এই ধরনের জমির সামনে বড় করে সাইনবোর্ড বা বিলবোর্ড দেয়া থাকে। জমির কাগজপত্র বা জমির সামনে বড় সাইনবোর্ডে সরকারি মালিকানাধীন নোটিশ লেখা থাকলে বুঝতে হবে যে এটি খাস জমি।
৩. জমির ব্যবহার ও উদ্দেশ্য
জমিটি কি কাজে ব্যবহৃত হবে বা কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হবে তা দেখেও বুঝা যায় যে এটি খাস জমি নাকি। খাস জমি গুলো সাধারণত কৃষি, উন্নয়ন, সমাজকল্যাণ প্রকল্প, সরকার চালিত খামার, স্কুল, হাসপাতাল, রাস্তা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়।
যেই জমি গুলো জনগণের স্বার্থে বিভিন্ন নগরায়নের জন্য ব্যবহার করা হয় সেগুলোই খাস জমি।
৪. ব্যক্তিগত মালিকানা অনুপস্থিত
খাস জমির কোনো ব্যক্তিগত মালিকানা থাকে না এবং সরকার দ্বারা পরিচালিত হয়। যদি কোনো জমির সুস্পষ্ট ব্যক্তিগত মালিকানা না থাকে এবং সরকার কতৃক নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে তবে তা খাস জমি নির্দেশ করে।
৫. ভূমি জরিপ ও রেকর্ড
সরকারের অধীনস্থ জমি বা খাস জমি গুলোর জরিপ ও রেকর্ড স্থানীয় ভূমি অফিসে থাকে যার তথ্য সংগ্রহ করে খাস জমি চেনা যায়।
বিভিন্ন জমির মালিকানা, উপাধি, রেকর্ড ইত্যাদি তথ্য ভূমি অফিসে সংরক্ষণ করা থাকে। এখান থেকে আপনি জমির সকল ধরনের তথ্য জেনে নিশ্চিত হতে পারবেন যে জমিটি খাস জমি কিনা।
৬. সরকারি প্রতিষ্ঠান
যেসব জমিতে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন সরকারি অফিস, পাবলিক অবকাঠামো, প্রশাসনিক ভবন ইত্যাদি থাকে সেগুলো হলো খাস জমি।
বিভিন্ন সরকারি কাজে ব্যবহার করা হবে বা ব্যবহার করা হয়েছে এমন সরকারি প্রতিষ্ঠানের জমি গুলো খাস জমি নির্দেশ করে।
বাংলাদেশে খাস জমির পরিমান
বাংলাদেশের খাস জমির পরিমান আমাদের অনেকেরই অজানা। বাংলাদেশে খাস জমি ৩ প্রকারের হয়ে থাকে। এর মধ্যে আমাদের দেশের মোট খাস জমির পরিমান আনুমানিক ১৭৩.৭৩ একর বা ৩.৩ মিলিয়ন একর। এর মধ্যে কৃষি বাবদ ০.৮ মিলিয়ন, অকৃষি বাবদ ১.৭ মিলিয়ন এবং পানি বা জলাশয় বাবদ ০.৮ মিলিয়ন খাস জমি আছে।
বাংলাদেশের এই খাস জমির মধ্যে ২৭০ একর পরিমান জমি বন্দোবস্তো বাবদ ধরা হয়েছে। তবে এর মধ্যে বন্দোবস্ত বাবদ ১.৪৮ একর পরিমান জমি দেয়া হয়েছে।
FAQ’s
খাস জমি ৩ প্রকার।
অনুমতি ছাড়া কোনো খাস জমি বিক্রি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।
টানা ৩ বছর খাজনা না দিলে উক্ত জমি বাজেয়াপ্ত বা খাস জমি হয়ে যায়।
৩০ বছর পর পর জমির রেকর্ড করা হয়।
যদি সরকার কতৃক প্রণীত নিয়মানুযায়ী বন্দোবস্ত দেয়া হয় তাহলে ব্যবহার করা যাবে।
বাংলাদেশের খাস জমি সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে।
ADVERTISEMENT